শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সারাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি করায় ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার (৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জোরদার হলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এরপর আন্দোলন ব্যাপকতা পায়; সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন। একপর্যায়ে ভয়াবহ ও নজিরবিহীন প্রাণহানির মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মুখে নানা অপকর্মে জড়িয়ে বারবার সংবাদ শিরোনাম হওয়া ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার।
আরও পড়ুন
গত ২৩ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’ অনুযায়ী সরকার সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।
বিজ্ঞাপন
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে, বিশেষ করে বিগত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ‘হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী’ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ বিষয়ে প্রামাণ্য তথ্য দেশের সকল প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের অপরাধ আদালতে প্রমাণিতও হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে ‘উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ’ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করেছে। আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। শুধু তা-ই নয়, পরবর্তী সময়ে ‘৫ আগস্ট তারিখ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যের’ সঙ্গে জড়িত বলে সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে।
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের কারণ বলতে গিয়ে আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সেমিনারে অংশ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সারাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে ছাত্রলীগ অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি করেছিল। শিক্ষাঙ্গন নিরাপদ না হলে পুরো দেশটাই অনিরাপদ হয়ে যাবে। তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রেস সচিব আরও বলেন, আর যেন কোথাও ছাত্রলীগ তৈরি হতে না পারে সে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এ জন্য শিক্ষার্থী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষকদের ভূমিকা রাখতে হবে। সুষ্ঠু একটি দেশ গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এমআর