মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

হিট অ্যালার্টেও রোদে পুড়ছে তাদের জীবন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৫ পিএম

শেয়ার করুন:

হিট অ্যালার্টেও রোদে পুড়ছে তাদের জীবন
বাধ্য হয়ে শ্রমজীবীদের রাস্তায় বের হতে হচ্ছে। ছবি: ঢাকা মেইল

নোয়াখালীর যুবক শহিদুল ইসলাম। নিম্ন আয়ের মানুষটি জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে এক ভ্যান তরমুজ নিয়ে ঘুরছেন পুরান ঢাকার সড়কে। গরমে সড়কে মানুষের আনাগোনা কিছুটা কম হওয়ায় বিক্রি বাড়াতে একাধিকবার জায়গা বদল করেছেন। তবু কাঙ্ক্ষিত বিক্রি নেই।

রোববার (২১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে যখন তার সঙ্গে কথা হয় তখনও ভ্যানে ২৫টির মতো তরমুজ। গরমের তীব্রতায় গামছা দিয়ে ঘাম মুছতে মুছতে জানালেন, চালানের টাকা ওঠার পর লাভের মুখ দেখতে পারবেন। কিন্তু গরমে মানুষ কম তাই সবকটি বিক্রি করতে পারবেন কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

চলছে হিট অ্যালার্ট: সাতসকালেই দুপুরের গরম!

শুধু শহিদুল ইসলাম নন, জীবিকার তাগিদে প্রখর রোদের মধ্যে কোটি মানুষের রাজধানীতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নিম্ন আয়ের লোকজন ঘরের বাইরে বের হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগ রোদে পুড়ে কাজ করছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপাকে রিকশাচালকরা। কারণ যাত্রী পরিবহনের সময় তাদের রোদ এড়ানোর কোনো সুযোগই নেই।

Red2

শহিদুলরা যখন পেটের দায়ে ঘরের বাইরে তখন সারাদেশে কয়েক দিনের দাবদাহে নাকাল জনজীবন। গরমের তীব্রতা বাড়ায় সারাদেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন রোদ এড়াতে। একান্ত যেতে হলে ছাতা কিংবা মাথায় ক্যাপ পরে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে চিকিৎসকদের তরফ থেকে। কিন্তু এসব মানুষ পক্ষে রোদ থেকে বাঁচার খুব একটা সুযোগ নেই।


বিজ্ঞাপন


লক্ষ্মীবাজারের ফুটপাতের কাপড় বিক্রেতা নাজমুল। গরমে অতিষ্ঠ এই যুবক দুপুর গড়াতেই পসরা সাজিয়ে বসছেন ফুটপাতে। এত গরমে কেন এখনই দোকান নিয়ে বসেছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলেন, 'রোদের চিন্তা করলে ভাই পেট চলবে না। ঈদের পর কেনাবেচা একদমই কম। এরমধ্যে গরম। ঘরে থাকলে নিজে কেমনে চলবো আর পরিবার কেমনে দেখবো?'

এময় পাশে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়ানো রিকশাচালক ফরিদ মিয়া কথা টেনে নিয়ে বলেন, ‘রোদে রোদে পুড়তে পুড়তে মামা আমাদের সহ্য হয়ে গেছে।’

আরও পড়ুন

গরমে সুপেয় পানি নিয়ে শ্রমজীবীদের পাশে পুলিশ

বিস্তারিত কথা বললে তিন সন্তানের বাবা ফরিদ মিয়া জানান, ১৫ বছর ধরে ঢাকায় রিকশা চালান। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট দুই মেয়ে স্কুলে যায়। সপ্তাহ শেষে যা আয় হয় তা থেকে মেসে থাকার খরচ রেখে বাকিটা স্ত্রীকে পাঠান।

ঢাকা মেইলকে ফরিদ বলেন, 'এবার আসলেই বেশি কষ্ট হইতেছে। একটু পরপর পানির পিপাসা লাগে। আরাম করে ছায়ায় থাকার কপাল নাই। বাধ্য হইয়া রোদে প্যাসেঞ্জার টানি।'

Red3

ন্যায্যমূল্যের আটা ও চাল বিক্রির ট্রাকে কাজ করা রুবেল জানান, আগে গাড়ি থেকে মালামাল নিতে অনেক লোক আসত। গরমে লোকজন কম। তবে তাদের নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে তিন দিন ঠিকই স্পটে আসতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন

তাপপ্রবাহে বাড়ছে রোগবালাই, হিট স্ট্রোকে ঘটছে মৃত্যু

তিনি বলেন, 'সপ্তাহে তিন দিন লক্ষ্মীবাজার আসি। সবাই জানে। গরমের অজুহাত দিয়ে গাড়ি না এলে লোকজনের ভোগান্তি হবে। তাই আসতেই হচ্ছে।'

অবশ্য গরমের কারণে দেড়টা থেকে তিনটা পর্যন্ত বিক্রি বন্ধ রাখার কথা জানান তিনি।

বিইউ/জেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর