দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ঢাকার অন্তত ৭টি আসনে সংঘাতের শঙ্কা রয়েছে। ভোটের প্রচার, প্রচারণার পর প্রার্থী সমর্থকদের অবস্থান ও ভোটারদের সাথে কথা বলে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এবার ঢাকার ২০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৫৮ জন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে ১৯টি আসন। একটি ছাড়া হয়েছে জাতীয় পার্টিকে।
বিজ্ঞাপন
যে ১৯টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আছে তার মধ্যে কয়েকটিতে বাধাহীন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা। তবে কিছু আসনে নৌকার বিপক্ষে শক্ত অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগেরই প্রার্থী, কোথাও জাতীয় পার্টি।
চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকার দিকে তাকালে দেখা যায়, ঢাকা-১ আসনে ৭ জন, ঢাকা-২ আসনে ৪ জন, ঢাকা-৩ আসনে ৬ জন, ঢাকা-৪ আসনে ৯ জন, ঢাকা-৫ আসনে ১২ জন, ঢাকা-৬ আসনে ৭ জন, ঢাকা-৭ আসনে ৭ জন, ঢাকা-৮ আসনে ১০ জন, ঢাকা-৯ আসনে ৯ জন, ঢাকা-১০ আসনে ৫ জন, ঢাকা-১১ আসনে ৮ জন, ঢাকা-১২ আসনে ৬ জন, ঢাকা-১৩ আসনে ৬ জন, ঢাকা-১৪ আসনে ১৪ জন, ঢাকা-১৫ আসনে ৮ জন, ঢাকা-১৬ আসনে ৬ জন, ঢাকা-১৭ আসনে ৭ জন, ঢাকা-১৮ আসনে ১০ জন, ঢাকা-১৯ আসনে ১০ জন ও ঢাকা-২০ আসনে ৭ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে লড়বেন।
সংঘাতের শঙ্কা
বিজ্ঞাপন
ঢাকা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালমান এফ রহমান। তার বিরুদ্ধে ভোটের মাঠে লড়বেন জাতীয় পার্টির সালমা ইসলাম।
আসনটির বাসিন্দা ও রাজনৈতিক মহলের মতে, এবার ভোটের মাঠে বিএনপি না থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে ঢাকা-১ আসনের ভোট৷ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এবারও দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাতের শঙ্কা দেখছেন সাধারণ ভোটাররা।
ঢাকা-২ ও ঢাকা-৩ আসনে সংঘাত বা প্রতিযোগিতা নেই। এই দুই আসনে নৌকাই শক্তিশালী।
তবে ঢাকা-৪ আসনে নৌকা পাওয়া সানজিদা খানমকে সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ভোটের দিন আসনটিতে দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাতের শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
প্রচারণা শুরুর আগে থেকেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে ঢাকা-৫ আসনে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা আরও জোরালো হয়েছে। এরইমধ্যে কয়েক দফা সংঘাত হয়েছে ঢাকা-৫ আসনে। যা আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে মনে করছেন আসনটির বাসিন্দা ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।
আসনটিতে নৌকার প্রার্থীর বিপরীতে একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন, যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। ভোটের মাঠে তারা কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নন। এ আসনে নৌকার প্রার্থী হারুনুর রশীদ মুন্নার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন মশিউর রহমান মোল্লা সজল (ট্রাক) ও কামরুল হাসান রিপন (ঈগল)।
ঢাকা-৬ থেকে ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনে নৌকার প্রার্থীদের বিপরীতে তেমন কোনো শক্ত প্রার্থী নেই। ফলে সংঘাতের শঙ্কাও তেমন নেই। তবে ঢাকা-১০ আসনে নৌকা ও লাঙলের লড়াইয়ের সম্ভবনা দেখছেন কেউ কেউ।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও সংঘাতের শঙ্কা রয়েছে ঢাকা-১৪ আসনের নির্বাচনে। ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী এই আসনেই। আসনটিতে নৌকার প্রার্থী যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল৷ তার বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সাবিনা আক্তার তুহিন। মিরপুরের অন্যতম জনপ্রিয় নেত্রী তিনি।
আলোচনা আছে, নৌকার প্রার্থী হলেও নিখিলের পক্ষে তুহিনকে হারানো সহজ হবে না।
আবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়া লুৎফর রহমানও শক্ত অবস্থানে আছেন।
প্রচারণার মাঠে এই তিন পক্ষ বেশ কয়েকবার সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে। একেকজন নিজেদের দখলে নিয়েছেন আসনের একেক এলাকা৷ ভোটের দিনও এ আসনে সংঘর্ষের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভোটাররা।
ঢাকা-১৫, ঢাকা-১৬, ঢাকা-১৭ আসনেও নৌকার বিপরীতে শক্ত প্রার্থী বা প্রচারণা নেই। নেই সংঘাতের শঙ্কাও।
ঢাকা-১৮ আসনে লড়ছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরীফা কাদের। আসনটিতে ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে স্বতন্ত্র চারজন। ভোটের মাঠে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি এ আসনেও সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
ভোটের আগের পরিবেশ বেশ থমথমে রয়েছে ঢাকা-১৯ আসনে৷ সাভারের এই আসনটিতে শক্ত প্রার্থী তিনজন। নৌকার প্রার্থী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বিপরীতে শক্ত অবস্থানে আছেন তৌহিদ জং মুরাদ ও মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এখানে ত্রিপাক্ষিক সংঘাতের শঙ্কা করছেন সাভারবাসী।
কারই