ভোটে কত শতাংশ মানুষ অংশ নিলে সেটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলে গণ্য হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ইলেকশন অবজারভার কনসোর্টিয়ামের (ইওসি) চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, কত মানুষ ভোটে অংশ নিলো সেটি আমাদের দেখার বিষয় না।
তিনি বলেন, আমরা শুধু ভোট অবজারভেশন করব। আপনারা সাংবাদিকরা প্রচার করবেন। আর সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করবেন সাধারণ জনগণ।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেশীয় ৩২টি সংস্থার সমন্বয়ে ইলেকশন অবজারভার কনসোর্টিয়াম (ইওসি) নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংগঠনটির চেয়ারম্যান করা হয় শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমানকে।
এছাড়াও এ সংগঠনে উপদেষ্টা করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন জিয়া রহমান এবং সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাকে।
ইলেকশন অবজারভার কনসোর্টিয়ামের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম প্রসঙ্গে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবন্ধিত ৯৬টি সংস্থা থেকে ৩২টি সংস্থা নিয়ে ইলেকশন অবজারভার কনসোর্টিয়াম গঠন করা হয়েছে। আমরা অনুমোদিত ৩২টি সংস্থা বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় ৩০০টি সংসদীয় আসনে মোট ৯ হাজার ৫৫৭ জন পর্যবেক্ষকের তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছি।
বিজ্ঞাপন
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এক মাসের বেশি সময় ধরে নির্বাচন নিয়ে কাজ করছি। কাজ করতে, একটি প্রতিষ্ঠান গুছিয়ে নিতে অনেক সময় লাগে। পরামর্শ নেওয়ার জন্য সার্বিক অবস্থা দেখে আমরা একত্রিত হয়েছি।
নোমান বলেন, পর্যবেক্ষকের মধ্য থেকে নির্বাচিত পর্যবেক্ষকদের ৮টি বিভাগে বিভক্ত করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ পর্যবেক্ষক তৈরি করা হবে। ইওসি'র নিজস্ব মনিটরিং সেল থাকবে। সার্বক্ষণিক কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে, যা ইওসি'র নিজস্ব অফিসে কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।
আব্দুল্লাহ আল নোমান আরও বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো বিষয়ে ত্রুটিবিচ্যুতি সংগঠিত হলে সেগুলো পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তুলে নিয়ে আসা। এছাড়া নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত নির্বাচনী উপকরণ এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দক্ষতা, সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতা সম্পর্কে অবহিত হয়ে ভবিষ্যতে ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে অবহিতকরণ।
ইলেকশন কমিশনে ইওসি'র সুপারিশ-
১. পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয় সভার ব্যবস্থা করা।
২. পর্যবেক্ষকদের কার্ড ভোট অনুষ্ঠানের কমপক্ষে ৫ দিন আগে পর্যবেক্ষকদের হাতে পাওয়ার ব্যবস্থা করা।
৩. সব পর্যবেক্ষকের আইডি কার্ড গ্রহণের ক্ষমতা নিবন্ধন করা সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা।
৪. পর্যবেক্ষকদের জন্য যাতায়াতের সুবিধার্থে মোটরসাইকেল স্টিকার অনুমোদন করা।
ইওসির সংস্থা সমূহের নামের তালিকা-
একটিভিটি ফর রিফরমেশন অব বেসিক নিডস-আরবান, ডিসঅ্যাবিলিটি ইনকুইজিশন অ্যাক্টিভিটিজ (দিয়া), আজমপুর শ্রমজীবী উন্নয়ন সংস্থা (আসাস), বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন (বিএএফ), লুৎফর রহমান ভূঁইয়া (এলআরবি), যুব উন্নয়ন সংস্থা, শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র (এসপিবিকে), কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (কেএইচআরডিএস), এসডাপ অ্যাসোসিয়্যাশন ফর ইন্টিগ্রেটেড সোসিও-ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট ফর আন্ডার প্রিভিলিজড পিউপল, ভলান্টারি অর্গানাইজেশন ফর স্যোসাল ডেভেলপমেন্ট (ভোসড), সমাজ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (এসপিকে), ডেভেলপমেন্ট পার্টনার (ডিপি), সমাহার- মাল্টিডিসিপ্লিনারি রিচার্স অ্যান্ড ভেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডিও), সোস্যাল ইক্যুয়ালিটি ফর ইনফেকটিভ অরগানাইজেশন (সিড), পল্লি একতা উন্নয়ন সংস্থা (রুডো), শিল্ড (সোসাইটি ফর হিউম্যান ইমভমেন্ট এম্পাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড লাস্টিং ডেভেলপমেন্ট), এসো জাতি গড়ি (এজাগ), ফোরাম ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (এফএফডিএ), প্রকাশ গণ কেন্দ্র (পিজিকে), রুরাল অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন (রাউডো), সার্ভিসেস ফর ইকুইটি অ্যান্ড ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট (সিড), রুরাল এডভান্সমেন্ট কমিটি ফর বাংলাদেশ (র্যাক বাংলাদেশ), ইকো-কনসার্ন এসোসিয়েশন (ECA), এসো বাঁচতে শিখি (এবাস), রুরাল ভিশন (আরভি), পিপলস এ্যাসোসিয়েশন ফর স্যোসাল এডভান্সমেন্ট (পাসা), বিয়ান মণি সোসাইটি (বিএমএস), অগ্রগতি সেবা সংস্থা (অসেস), এআরডি (এসোসিয়েশন ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট), রাজারহাট স্বাবলম্বী সংস্থা, সবার তরে আমরা ফাউন্ডেশন (এসটিএএফ)।
এআইএম/এমএইচএম