নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার পর অন্য সবধরনের সভা-সমাবেশ বন্ধের নির্দেশনা দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠির ব্যাখ্যা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর জানিয়েছেন, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবে না এমন সভা-সমাবেশে তাদের কোনো আপত্তি নেই। সরকার অনুমতি দিলে যেকোনো শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করা যাবে।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসি আলমগীর এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হচ্ছে আগামী ১৮ ডিসেম্বর সোমবার। ওইদিন থেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার বাইরে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন যাতে অন্য কোনো সভা-সমাবেশ করতে না পারে সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বিজ্ঞাপন
সেই চিঠি প্রসঙ্গে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই নির্দেশনায় সভা-সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘিত হবে না জানিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন সংবিধানের আলোকেই এই নির্দেশনা দিয়েছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘কেউ যদি শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করে এ বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। সরকার যেখানে অনুমতি দেবে সেখানে সভা-সমাবেশ করবে। আমাদের বক্তব্য হলো নির্বাচনে বাধা সংক্রান্ত সভা-সমাবেশ করা যাবে না। যে সমস্ত কর্মসূচি নির্বাচনের পথে হুমকি বা বাধা এ সমস্ত কর্মসূচি করা যাবে না। তবে যেকোনো দেশে যেকোনো পক্ষের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বা বক্তব্য দেওয়ার অধিকার তাদের আছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে তারা করতে পারবে।’
সমাবেশ প্রসঙ্গে ইসি আলমগীর বলেন, ‘আমাদের আইনে আছে নির্বাচনবিরোধী কোনো কাজ করা যাবে না। আইনে আছে কেউ যদি ভোটে বাধা দেয়, হুমকি দেয়, ভয় দেখায় তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। আমি আবারও বলছি, একই কথা কেউ যদি শান্তি সমাবেশ করে তবে রাষ্ট্রের প্রচলিত নিয়মে করতে পারবে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ কর্মসূচি রাজনৈতিক দল অবশই করতে পারবে, বাধা নেই।’
আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনী একটা আচরণবিধি আছে বা আইন আছে। সেটা হলো নির্বাচনী কাজে কেউ যদি বাধা দেয় তাহলে আমাদের আইন অনুযায়ী এটা অপরাধ। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি, যাতে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ থাকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকে। কেউ যদি ভোট বিরোধী কোনো শোডাউন বা কর্মসূচি দিয়ে থাকে তবে এটা করা যাবে না।’
বিএনপির মতো রাজনৈতিক দলের অধিকার ক্ষুণ্ন হলো কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি বলেন, ‘শুধু বিএনপি না, যেকোনো রাজনৈতিক দল যদি বলে তারা ভোটে অংশ নেবে না অথবা ভোটারদের বলতে পারে আপনারা ভোট দিতে আসবেন না। সেই ব্যাপারে আমাদের কোনো কথা নেই। তবে যদি কেউ কোনো সন্ত্রাসীমূলক কাজ করে, জ্বালাও-পোড়াও করে, রেললাইন কেটে দেয় এ ধরনের কাজ করে তবে এটা করতে দেওয়া যাবে না।’
সমাবেশ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সমাবেশ করার পারমিশন দেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এটা আমাদের বিষয় না। আমাদের বিষয় হলো নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করে এ রকম কোনো কাজ করা যাবে না। আপনি যদি বলেন, ভোট দিতে যাবেন না আপনার খবর আছে, এ রকম কাজ করা যাবে না।’
বিইউ/জেবি