সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

‘নারী শিক্ষার প্রসারে বেগম রোকেয়ার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৭ এএম

শেয়ার করুন:

‘নারী শিক্ষার প্রসারে বেগম রোকেয়ার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বেগম রোকেয়ার জীবনাচরণ ও নারী শিক্ষার প্রসারে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

আজ বেগম রোকেয়া দিবস এবং বেগম রোকেয়া পদক প্রদান উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেগম রোকেয়া ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন আধুনিক নারী। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন সমাজ তথা রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। তাঁর এই উপলব্ধি ও আদর্শ আজও আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়।

তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আমি বাঙালি নারী শিক্ষার প্রসার ও নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। এ বছর যাঁরা ‘বেগম রোকেয়া পদক’ পেয়েছেন আমি তাঁদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে নারী শিক্ষার প্রসার ও নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন পথিকৃত। তিনি বিশ্বাস করতেন দেশকে এগিয়ে নিতে হলে এবং সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হলে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করা ছাড়া তা সম্ভব নয়। তাই তিনি নারীর সমান অধিকার, সমমর্যাদা, সাম্য ও স্বাধীনতার অপরিসীম গুরুত্ব অনুধাবন করে সংবিধানে নারীর ক্ষমতায়নের শক্ত ভিত রচনা করেছিলেন। তিনি জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষিত রাখার বিধান করেন। ১৯৭২ সালেই চাকরিক্ষেত্রে নারীদের জন্য শতকরা ১০ ভাগ কোটা সংরক্ষণ করেন এবং ১৯৭৩ সালে তাঁর গৃহীত প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় নারীর জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও কল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে নারীকে সম্পৃক্ত করতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ধারণা বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা ১৯৯৭ সালে সর্বপ্রথম জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ঘোষণা করি। ২০০৯ সালে ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমরা দেশে নারী শিক্ষার প্রসার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করছি। বাল্যবিবাহ নির্মূলের জন্য ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’ প্রণয়ন করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আইন প্রণয়ন, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে, সাংবাদিকতা, তথ্য-প্রযুক্তি, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং খেলাধুলাসহ পেশাভিত্তিক সকল স্তরে আজ নারীদের গর্বিত পদচারণা। এভারেস্ট বিজয় থেকে শুরু করে মানবাধিকার রক্ষা এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কর্মকাণ্ডে নারীরা বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছেন।

তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এশিয়ার দেশগুলোর শীর্ষে। জেন্ডার সমতা সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অবস্থান আজ বিশ্বে ৭ম। আমাদের স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী, তৈরি পোশাক কর্মীদের ৮০ শতাংশের বেশি নারী। বর্তমানে সংরক্ষিত আসন ও নির্বাচিত ২২ জনসহ ৭২ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন। স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচিত নারী প্রতিনিধির সংখ্যা ১০ হাজারের অধিক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর সফল বাস্তবায়নে নারীর অংশগ্রহণ এখন দৃশ্যমান। নারী উন্নয়নের স্বীকৃতি হিসেবে আমরা জাতিসংঘের ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছি। এসডিজি অর্জনে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সূচকে এগিয়ে থাকায় আমরা ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’ অর্জন করেছি। তাই বাংলাদেশ আজ নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বিশ্বের কাছে অনুকরণীয়।

সরকারপ্রধান ‘বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর