দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে খুলে গেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দুয়ার। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে নামফলক উম্মোচনের মাধ্যমে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত প্রথম টানেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন সরকারপ্রধান।
এরপর ১১টা ৫০ মিনিটে টানেলে প্রবেশ করেন। ৭ মিনিটে টানেল পাড়ি দিয়ে অপরপ্রান্তে পৌঁছান সরকারপ্রধান।
বিজ্ঞাপন
আনোয়ারা নদীর দক্ষিণ তীরে আরেকটি ফলক উন্মোচন করবেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রী এ উপলক্ষে একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী দিনের খাম এবং প্রথম নদীর তলদেশে সড়ক টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে একটি বিশেষ সিলমোহরও অবমুক্ত করবেন।
সেখান থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার কেইপিজেড মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় যোগ দেবেন তিনি। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ এ জনসভার আয়োজন করেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতির আরেক স্বর্ণদুয়ার উন্মোচন করেছেন। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মিরসরাই থেকে চট্টগ্রাম হয়ে মহেশখালী, টেকনাফ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী অনন্য এই অর্থনৈতিক বলয় গড়ে তুলছেন।
বিজ্ঞাপন
কর্ণফুলী নদীর দুই তীর সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ওয়ান সিটি টু টাউন গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেলটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং টানেল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন।
টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে চার হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ হারে ২০ বছর মেয়াদি এ ঋণ দিয়েছে। চীনের কমিউনিকেশন ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) টানেল নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।
টানেল নির্মাণের আগে প্রকাশ করা এত সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, টানেল চালুর পর এর ভেতর দিয়ে বছরে ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করতে পারবে। সে হিসাবে দিনে চলতে পারবে ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি। ২০২৫ সাল নাগাদ টানেল দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন চলাচল করবে। যার মধ্যে অর্ধেক থাকবে পণ্যবাহী পরিবহন। ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০৬৭ সাল নাগাদ এক লাখ ৬২ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে। যার মাধ্যমে বাড়বে জিডিপি। বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি।
এমআর