বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪, ঢাকা

দুর্ভোগের অন্ত নেই ডিএনসিসির নতুন ওয়ার্ডগুলোতে

দেলাওয়ার হোসাইন দোলন
প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:২৬ এএম

শেয়ার করুন:

দুর্ভোগের অন্ত নেই ডিএনসিসির নতুন ওয়ার্ডগুলোতে
ছবির কোলাজ ঢাকা মেইল

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নতুন যোগ হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডের অধিকাংশই উন্নয়নবঞ্চিত। সিটি করপোরেশনে যুক্ত হওয়ার সাত বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো তেমনটা উন্নয়ন হয়নি অধিকাংশ নতুন ওয়ার্ডে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ডিএনসিসির ওয়ার্ডে অন্তর্ভুক্ত হলেও এসব ওয়ার্ডের বাসিন্দারা নাগরিক নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওইসব এলাকার বাসিন্দারা।

২০১৬ সালের মে মাসে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আশপাশের ৮টি করে মোট ১৬টি ইউনিয়ন যোগ করা হয়। পরবর্তীতে এই ইউনিয়নগুলোকে নতুন ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়।


বিজ্ঞাপন


Dhakaএর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে যুক্ত হওয়া আটটি ইউনিয়নকে ভেঙে ১৮টি ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে বাড্ডা ইউনিয়নকে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড, ভাটারাকে ৩৯ ও ৪০ ওয়ার্ড, সাঁতারকূলকে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড, বেরাইদকে ৪২ নম্বর ওয়ার্ড, ডুমনিকে ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড, উত্তরখানকে ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড, দক্ষিণখানকে ৪৭, ৪৮, ৪৯ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ড এবং হরিরামপুরকে ৫১, ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়। এই ১৮টি ওয়ার্ডের আয়তন ১১৩ দশমিক ৫৯ বর্গকিলোমিটার।

নতুন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বলছেন- সিটি করপোরেশনে যুক্ত হওয়ার কয়েক বছর পার হলেও এখনো তাদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সড়কগুলোর অবস্থা তেমনটা ভালো নয়। খানাখন্দে ভরা বহু সড়ক। যানবাহনে চলাচল করা কষ্টকর। সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় সড়ক। তখন চলাচল করা আরও কষ্টকর হয়ে যায়। ডুবে যাওয়া সড়কের পানি নামতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এছাড়া ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারন করলেও এসব ওয়ার্ডে মশা নিধনে তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। ফলে তাদের মধ্যে সবসময় ডেঙ্গু আতঙ্ক কাজ করে।

Dhaka-7সরেজমিন এসব ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়- অনেক ওয়ার্ডে সড়কের উন্নয়ন কাজ চলছে। সরকারি পর্যায়ের কাজের পাশাপাশি চলছে সিটি করপোরেশেনও কিছু কাজ। কোথাও আবার পানি নিষ্কাশন নালা তৈরি শেষ হয়েছে। যদিও সড়ক নির্মাণসহ এসব উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে বিচ্ছিন্নভাবে। বৃষ্টিতে অনেক স্থানে পানি জমে আছে। মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তেমন উদ্যোগ না নেওয়ায় মশার উৎপাত বেড়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫২ নং ওয়ার্ডের বাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা আক্তার হোসেন বলেন, সড়কের যে অবস্থা বৃষ্টি না হলেও চলা দায়। আবার বৃষ্টি হলে তো ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়। দিনের পর দিন পানি জমে থাকে। আমরা কাগজে-কলমেই সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত। সেবা না পাওয়া যেন কপালের লিখন।


বিজ্ঞাপন


dhaka-3রফিকুল ইসলাম নামে আরেকজন বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গু আতঙ্ক কাজ করলেও এসব এলাকায় ডেঙ্গু নিধনে সিটি করপোরেশনের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। মশা নিধনে কোনো কর্মীকে দেখাই যায় না। উপায় না পেয়ে আতঙ্ক নিয়েই চলতে হয়।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়- জনবল সংকটসহ নানা কারণে মশা মেরে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না তারা। ঘাটতি রয়েছে মশা মারার ওষুধ, জনবল ও যন্ত্রপাতির। নতুন ওয়ার্ড ঘিরে যে মহাপরিকল্পনা করেছে সিটি করপোরেশন, তা বাস্তবায়ন হলে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত থেকে শুরু করে অনেক সংকটের সমাধান হবে বলে তারা আশা করছেন।

Dhaka-6সার্বিক বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম জানান, নতুন ওয়ার্ডগুলোর রাস্তার জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতা নিরসনের লক্ষ্যে ডিএনসিসি ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের সমন্বয়ে কাজ চলছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে নতুন এলাকার সড়ক অবকাঠামো ও ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পভুক্ত তিনটি প্রধান সড়ক: কসাইবাড়ী রোড, আজমপুর রোড ও হরিরামপুর রোড সম্পন্ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রকল্পভুক্ত অন্যান্য রাস্তাগুলোর উন্নয়ন কাজও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।

Dhaka-8উন্নয়নে এলাকার বাসিন্দাদের সহযোগিতা চেয়ে মেয়র বলেন, ওই এলাকার জনগণকে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে সহযোগিতার আহ্বান করছি। রাস্তার সীমানার মধ্যে যাদের অবৈধ স্থাপনা রয়েছে নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নেবেন। অবৈধ স্থাপনার জন্য আমরা সিটি করপোরেশন থেকে কোনো বৈধ নোটিশ দেব না। নিজেরা না সরালে আমরা বুলডোজার দিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করব।

ডিএইচডি/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর