শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সাগু কী, কীভাবে তৈরি হয়? 

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ জুন ২০২৩, ০৪:৫১ পিএম

শেয়ার করুন:

সাগু কী, কীভাবে তৈরি হয়? 

সাগু বা সাবুদানা নামটির সাথে আমরা সবাই মোটামুটি পরিচিত। এটি দেখতে অনেকটা ছোটো সাদা দানাদার মুক্তার মতো হয়ে থাকে। ইংরেজিতে একে সাগু পার্ল বলে। আগে শিশু ও রোগীদের খাবার হিসেবে সাগু ব্যবহৃত হলেও, বর্তমানে বিভিন্ন মজাদার রেসিপি তৈরিতে এই উপাদানটি ব্যবহৃত হয়। 

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এই সাবুদানার উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে। এটি কোথায় থেকে আসে? সাগু কি গাছে ধরে নাকি মেশিনে তৈরি হয়? এর উপকারিতা কী? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমাদের অনেকেরই জানা নেই। চলুন জেনে নিই এসম্পর্কে বিস্তারিত-


বিজ্ঞাপন


sabu

সাগু কী?

সাগু হলো এক প্রকার স্টার্চ বা কার্বোহাইড্রেট। বিভিন্ন উষ্ণমন্ডলীয় পাম গাছের কাণ্ডের ভেতরের নরম স্পঞ্জের মতো অংশ থেকে নিষ্কাশিত নির্যাস এটি। এর বৈজ্ঞানিক নাম মেট্রোক্সিলন সাগু। মেট্রোক্সিলন শব্দটি একটি গ্রিক শব্দ। মেট্রো অর্থ গাছের নরম অন্তঃসার আর জিলন অর্থ কাঠ।

টাপিওকা বা কাসাভা নামক পাম গাছ থেকে সাগু তৈরি হয়। কাসাভা বেশ কয়েক প্রজাতির রয়েছে। যার কয়েকটি মারাত্মক বিষাক্ত। এমনকি ভালো জাতের কাসাভাও ঠিকমতো প্রস্তুত না করা হলে বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে। এই গাছের কাণ্ডের মধ্যকার স্পোর থেকে মূল গাছ জন্মায়। স্পোর লাগানোর সাধারণত ৭ থেকে ১৫ বছর পর গাছে ফুল ধরার সময় হয়। এই গাছে মাত্র একবারই ফুল ফোটে এবং ফল ধরার পর গাছ মারা যায়। সাগু গাছের ছড়িয়ে পড়া পাতার কেন্দ্রে কোন হয়। এই কোন সম্পূর্ণ পেকে গেলে গাছ মরে যায়। তাই কোন হওয়ার আগেই এর শক্ত কাণ্ড ও মূল সংগ্রহ করা হয়। যা থেকে উৎপাদিত হয় সাগু।


বিজ্ঞাপন


sagu

সাবুদানা কীভাবে তৈরি হয়?

সংগ্রহ করা কাণ্ড ও মূল পানি দিয়ে ফোটানো হয়। ফলে একধরণের আঠালো লেই বা সাদা স্টার্চ বেরিয়ে আসে। পানি দূর করে এই স্টার্চকে আলাদা করে শুকানো হয়। এই শুকনো গুঁড়োর মতো পদার্থকেই বলে সাগু। 

সাগু প্রথমে আটা, ময়দার মতো গুঁড়ো অবস্থায় থাকে। বাজারজাতের জন্য একে মেশিনের সাহায্যে দানা করে খাওয়ার উপযুক্ত করে তোলা হয়। বাজার থেকে আমরা যে মুক্তোর দানার মতো সাগু কিনে থাকি তা ওই লেই থেকে তৈরি করা হয়। সাগুর তৈরির এই পদ্ধতিকে বলা হয় জিলেটিনাইজেশন। 

sagu

সাগু খাওয়ার উপকারিতা

সাগু উন্নতমানের কার্বহাইড্রেট, ফাইবার ও ক্যালসিয়ামের উৎস। এটি সহজপাচ্য তাই শিশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাগুর উল্লেখযোগ্য কিছু উপকারিতা হলো- 

মানব শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায় 
পেশী সংকোচনে সহায়তা করে
দেহে পানির ভারসাম্য রক্ষা করে
খুবই কম পরিমাণে চর্বি থাকায় হার্টের রোগীদের জন্য আদর্শ খাবার
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে

sagu

সাগু খাওয়ার নিয়ম

শুকনো অবস্থার চেয়ে পানিতে ভিজিয়ে খেলে সাগুর সহজপাচ্যতা বেড়ে যায়। এইকারণে রোগীকে দেওয়ার সময় সাগু পানি বা দুধ দিয়ে ফোটানো হয়। যার ফলে হাইড্রোজেন বন্ডের শূন্যস্থানে পানি প্রবেশ করে সাগুকে আরও সহজপাচ্য করে তোলে।

আজকাল সাগু দিয়ে ফালুদা, পায়েস, সুজি, হালুয়ার মতো বিভিন্ন ধরনের মজাদার খাবার তৈরি করা হয়। আলু ও অন্যান্য সবজির সঙ্গে পানিতে ভেজানো সাগু দিয়ে চপ এবং বড়া বানানো হয়ে থাকে। এটি বেশ মজাদার এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। তাই খাদ্যতালিকায় সাগু রাখতে পারেন আপনিও।  

এসবিএ/এনএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর