শীতের বিদায় ঘণ্টা বেজেছে। কদিন বাদে শুরু ফাল্গুন। সেই সঙ্গে একটু একটু করে বাড়ছে তাপমাত্রা। রাতে ঠান্ডা, দিনে গরম— এমন আবহাওয়ার কারণে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। কারণ আবহাওয়ায় প্রচুর জীবাণু এই সময়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের চারপাশে সবসময়ই জীবাণু ঘুরে বেড়ায়। তবে সব সময় অসুখ হয় না। কারণ দেহের ইমিউনিটি নিজের কাজ করে চলে। তবে কিছু মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে তারা ইনফ্লুয়েঞ্জা ও প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস চেপে ধরে।
বিজ্ঞাপন
বর্তমানে অনেকেরই খুসখুসে কাশি হচ্ছে। কারোর কাশির সঙ্গে বের হচ্ছে কফ। দুই দলই ভরসা রাখছে কফ সিরাপে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কাশি হলেই কি এই সিরাপ খাওয়া উচিত? চলুন জেনে নিই বিস্তারিত-
কফ সিরাপ কী?
চিকিৎসকদের মতে, কফ সিরাপ হলো অ্যান্টিঅ্যালার্জিক, ব্রঙ্কোডায়ালেটর, এক্সপেকটোরেন্ট, ভ্যাসোকনস্ট্রিকটরের মিশ্রণ। কাশির ক্ষেত্রে এই ওষুধ দারুণ কাজ করে। চারটি উপাদানের ভিন্ন ভিন্ন কাজ রয়েছে। কোনোটি অ্যালার্জি কমায়, কোনটি কফ কমায়। আবার কোনটি মস্তিষ্কে কাশির সংকেতবাহী জায়গাকে দমিয়ে রাখে, কোনটি কফ তৈরি হতে দেয় না। সবগুলো উপাদান একসঙ্গে কাজ করে বলে কাশি দমন হয়।
বিজ্ঞাপন
কাশি হলেই কি কফ সিরাপ খাওয়া উচিত?
বিশেষজ্ঞের উত্তর একদমই নয়। নানা কারণে কাশি হতে পারে। অনেকের বেলায় পেটে গ্যাস থেকেও কাশি হয়। তাই কাশি হলেই কফ সিরাপ নয়। মনে রাখবেন, এই সিরাপের বিভিন্ন ধরন রয়েছে। চিকিৎসকই ভালো বলতে পারবেন রোগী কোন ধরণের কফ সিরাপ খাওয়া উচিত। নিজে থেকে কিনে খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
আরও পড়ুন-
সর্দি-কাশিতে নাজেহাল? যষ্টিমধুতে সমাধান
জানতে হবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
না বুঝে অনেকেই কাশির জন্য কফ সিরাপ খান। এতে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। যেমন-
১। অ্যাজমা রোগীদের শ্বাসকষ্ট হতে পারে
২। মাত্রাতিরিক্ত ঘুম পেতে পারে
৩। রক্তচাপ বেড়ে যায়
৪। বুকের ভেতর কফ সিক্রেশন কমে যাওয়ায় অন্য অসুখ হয়।
এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কফ কি বসে যায়?
অনেকেই মনে করেন কাশির ওষুধ খেলে বোধহয় কফ বসে যাবে। এই বিষয়টি কিন্তু ঠিক নয়। এটা কাল্পনিক ধারণা। এক্ষেত্রে কফ বরং বেরিয়ে যায় ও কফ তৈরি বন্ধ হয়। তাই ভয় পাবেন না।
অনেকের আবার শুষ্ক কাশি হয়। সেই পরিস্থিতিতে কী কাজ করে কাফ সিরাপ? বিশেষজ্ঞদের মতে, শুষ্ক কাশির বহু কারণ রয়েছে। অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্স থেকেও সমস্যা হয়। তাই রোগ না বুঝে এই নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না।
আরও পড়ুন-
জ্বর-সর্দি-কাশিতে নাস্তানাবুদ শহরবাসী
কাশি হলে করণীয় কী?
চিকিৎসকদের মতে, কাশি কমাতে কাফ সিরাপ না খেলেও চলে। কিছু ঘরোয়া উপায় আগে কাজে লাগিয়ে দেখুন। সেক্ষেত্রে গার্গল করুন দিনে ৩ থেকে ৪ বার। গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। এতে অনেকটা উপকার পাবেন।