একেক জনের স্বাস্থ্য সমস্যা একেকরকম। কেউ কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ে কষ্ট পান। কেউবা ভোগেন অর্শের সমস্যায়। মলদ্বার সম্পর্কিত আরেকটি রোগ হলো ফিস্টুলা। যা নিয়েও দুশ্চিন্তা বাড়ছে মানুষের। এই সবকটি রোগের সাধারণ একটি উপসর্গ হলো মলের সঙ্গে রক্তপাত হওয়া।
মলদ্বারে বিশেষ সংক্রমণ হলে ফিস্টুলা হয়। মানুষের মলদ্বারের ভেতরে অনেকগুলো গ্রন্থি রয়েছে। এগুলোতে সংক্রমণের কারণে ফোড়া হয়। একেই ফিস্টুলা বলে। এটি নলের মতো গঠন তৈরি করে পায়ুপথে। এর একটি মুখ রেকটামের ভিতরের দিকে থাকে আর একটি মুখ থাকে বাইরে পায়ুদ্বারের ঠিক পাশে।
বিজ্ঞাপন
অনেকসময় এসব ফোঁড়া ফেটে মলদ্বারের চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে পায়ুপথের ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে আসে পুঁজ ও রক্ত। এমনটা হলে প্রচুর ব্যথা। যা অনেকসময় মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায়। ক্যানসার, বৃহদান্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ, যক্ষ্মা ও যৌনরোগের কারণেও ফিস্টুলা হতে পারে।
ফিস্টুলার উপসর্গ
কিছু উপসর্গ রয়েছে যা দেখা দিলেই সাবধান হয়ে যেতে হবে। চলুন জেনে নিই বিস্তারিত-
বিজ্ঞাপন
১। মলদ্বারে ঘন ঘন ফোঁড়া হলে, মলদ্বারের চারপাশে ব্যথা ও ফোলাভাব থাকলে সতর্ক হন।
২। মলদ্বারের চারপাশের কোনো নির্দিষ্ট স্থান থেকে রক্তাক্ত বা দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ বের হলে সাবধান হয়ে যান।
৩। মলত্যাগের সময়ে মলদ্বারের চারপাশে জ্বালা হলে সতর্ক হন। ফিস্টুলার লক্ষণ এটি।
৪। মলত্যাগের সময়ে তীব্র ব্যথা হওয়া এবং মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া উপসর্গগুলোও নজরে রাখুন। ফিস্টুলা হলে ঘন ঘন জ্বরও হয়ে থাকে।
করণীয় কী?
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ফিস্টুলা সমস্যার সমাধান করা যায়। তবে অস্ত্রোপচারের পরেও এই রোগ ফিরে আসতে পারে। তাই জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
ফাইবারের পরিমাণ বৃদ্ধি
খাদ্যতালিকায় ফাইবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা কমে।
পরিমাণমতো পানি পান
প্রতিদিন অন্তত ৩/৪ লিটার পানি পান করুন। এর সঙ্গে ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন। জুস না করে ফল চিবিয়ে খাওয়া ভালো। পেয়ারা, আপেল, নাসপাতির মতো ফল খোসাসহ চিবিয়ে খান।
টক দই
পরিপাকতন্ত্রের জন্য টক দই বেশ উপকারি। রোজকার পাতে এই খাবারটি রাখুন।
এ সম্পর্কিত আরও খবর-
কোষ্ঠকাঠিন্য কি কোলন ক্যানসারের লক্ষণ
গুড় খেলে দূর হয় কোষ্ঠকাঠিন্য
যে ৫ খাবার খেলে দূর হয় কোষ্ঠকাঠিন্য
মাংস কম খান
খাদ্যতালিকা থেকে মাংসের পরিমাণ কমাতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্যের অন্যতম কারণ এটি। মাংস খেলেও তার সঙ্গে পরিমাণমতো পানি ও ফাইবার খেতে হবে।
এসবের পাশাপাশি প্রতিদিন অল্প সময় হলেও ব্যায়াম করতে হবে। শরীরচর্চা, হাঁটাহাঁটি করার মাধ্যমে শরীর সুস্থ থাকে।
এনএম
