পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ কী

দাম্পত্য জীবনের একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে যৌনজীবন। যদিও বিষয়টিকে লজ্জার মনে করেন অনেকে। তাই কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা লুকিয়ে রাখতে চেষ্টা করেন। এতে দাম্পত্য থেকে শুরু করে সন্তান গ্রহণে সমস্যা দেখা দেয়।
সম্প্রতি উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে পুরুষের বন্ধ্যাত্বের সমস্যা। শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস পাওয়া, শুক্রাণুহীনতা, মিলনে অক্ষমতা— ইত্যাদি স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পুরুষের বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী পরিবেশ দূষণ, অতিরিক্ত মদ্যপান, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, চর্বিজাতীয় বা রাস্তার খাবার খাওয়ার প্রবণতা, তামাক সেবন ইত্যাদি।
এছাড়াও কিছু কারণে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়। চলুন এমন কিছু কারণ সম্পর্কে জেনে নিই-
ক্রোমোজোমঘটিত রোগ
ক্রোমোজোমঘটিত রোগ যেমন ক্লাইন, ফিলটার সিনড্রোম প্রভৃতির জন্য শুক্রাণু কমে যেতে পারে। আর শুক্রাণুর সংখ্যা কমতে থাকলে একসময় বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়।
ড্যারিকোসিন
এটি একটি অণ্ডকোষের রোগ। এর কারণে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। এছাড়া সিলিয়াক ডিজিজের কারণেও শুক্রাশয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেকক্ষণ ধরে সাইকেল চালানো, অতিরিক্ত তাপের কাছে বসে কাজ করা ইত্যাদি কারণেও শুক্রাশয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
>> আরও পড়ুন: গর্ভধারণের উপযুক্ত সময় কোনটি?
বিভিন্ন ওষুধ
বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে ওষুধও। ক্যানসার রোগে ব্যবহৃত ওষুধ, পেশি তৈরি করতে ব্যবহৃত অ্যালকনিক স্টেরয়েড, সাইমেটাকিন নামক অম্বলের ওষুধ, গ্লাইরোকেল্যারুটোন নামক ওষুধ থেকেও এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ব্যবহার
অবাক করা তথ্য হচ্ছে মোবাইল ফোন আর ল্যাপটপের কারণেও পুরুষের বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। একাধিক গবেষণা অনুযায়ী, অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপের ব্যবহার করলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষত কোলের ওপর ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করলে তাপে অণ্ডকোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
>> আরও পড়ুন: পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ যেসব খাবার
শুক্রাণুর সংক্রমণ
শুক্রাণুতে কোনো সংক্রমণ হলে এর নড়াচড়ার ক্ষমতা লোপ পায়। ফলে বন্ধ্যাত্ব অবধারিত। বিভিন্ন ওষুধের মাধ্যমে শুক্রাণুর সংক্রমণ সারানো যায়। আবার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেয়ে শুক্রাণুর পরিমাণও বাড়ানো যায়। তবে শুক্রথলি বা টেস্টিসের কার্যকারিতা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেলে চিকিৎসা করা মুশকিল। একজন পুরুষের ন্যূনতম ২ কোটি শুক্রাণু না থাকলে সন্তান উৎপাদনে সমস্যা হতে পারে।
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের জন্য এসব কারণের পাশাপাশি কর্মজীবনও বেশ দায়ী। অফিস থেকে শুরু করে পরিবারের নানা কাজের চাপে থাকেন তারা। মনে টানাপোড়ন নিয়ে দিন কাটান। মানসিক চাপের কারণে দেখা দেখ অনিদ্রা সমস্যা। হরমোন হারায় তার ভারসাম্য। ফলে এর ছাপ পড়ে যৌনজীবনেও। মানসিক অবসাদের কারণে দেখা দিতে পারে বন্ধ্যাত্বও।
এনএম