কফি ছাড়া অনেকের দিন চলেই না। সকালে ঘুম থেকে উঠে কফি কাপে চুমুক দিয়েই শান্তি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমভাবে এই পানীয়টি প্রস্তুত করা হয়। স্বাদ এবং তৈরির প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে দামও হয় ভিন্ন।
পৃথিবীর সবচেয়ে দামী কফির নাম ‘ব্ল্যাক আইভরি কফি’। থাইল্যান্ডে এটি তৈরি হয়। শুনলে অবাক হবেন এই কফি তৈরি হয় হাতির গোবর থেকে! কি, গা গোলাচ্ছে? শুনতে কেমন লাগলে সত্যিই পৃথিবীর সবচেয়ে দামী কফি এভাবে প্রস্তুত করা হয়।
বিজ্ঞাপন
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্ল্যাক আইভরি কফি প্রস্তুতকারী সংস্থার মালিকের নাম ব্লেক ডানকিন। তিনি ২০০২ সালে জাপানের এক কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সেসময় তিনি জানতে পারেন, গন্ধগোকুলের মল থেকে তৈরি থাইল্যান্ডের কোপি লুয়াক কফি কফিপ্রেমীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। তারা এর জন্য ৫০ ডলার পর্যন্ত খরচ করছেন।
এমন খবর শুনে চাকরি ছেড়ে দেন ব্লেক। তিনি ব্ল্যাক আইভরি কফি নামে একটি কোম্পানি খুলেন। প্রথমে গন্ধগোকুলের মল ব্যবহারের কথা ভেবেছিলেন তিনি। কিন্তু পরে হাতির গোবর থেকে কফি সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেন।
বিজ্ঞাপন
কীভাবে প্রস্তুত হয় এই কফি? জানা যায়, প্রতি দিনের খাবারের সঙ্গে অ্যারাবিকা চেরি মিশিয়ে তা খেতে দেওয়া হয় হাতিকে। তৃণভোজী হওয়ায় চেরির সেলুলোজে উৎসেচন হয়। ফলে হাতির মল থেকে ‘মিষ্টি ফলের সুগন্ধ’ বের হয়। এক কেজি কফি তৈরির জন্য ৩৩ কেজি চেরি খাওয়াতে হয় হাতিদের।
>> আরও পড়ুন: চা-কফি কি দাঁতের ক্ষতি করে?
এরপর এই মল সংগ্রহ করে তা পরিষ্কার করে রোদে শুকানো হয়। আমাদের দেশের ঘুঁটে দেওয়ার মতো ব্যাপারটি। রোদে শুকোনোর পর প্রথমে তার উপরিভাগ ফেলে দেওয়া হয়। এরপর তা সংগ্রহ করে যন্ত্রের মাধ্যমে আলাদা করা হয়। তারপর সেগুলোকে যন্ত্রের মধ্যে শুকনো করে ভাজা হয়।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, থাইল্যান্ডের চিয়াং সায়েন এলাকায় গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল এলিফ্যান্ট ফাউন্ডেশনে যে হাতিরা আশ্রয় পায়, মূলত সেখান থেকেই তাদের মল সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলে।
বিখ্যাত এই কফির স্বাদ কেমন? জানা যায় ব্ল্যাক আইভরি কফি অপেক্ষাকৃত কম তেতো এবং কিছুটা ক্যারামেল এবং চকলেটের মতো। প্রতি কেজি কফির মূল্য ২ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দুই লাখ ২৭ হাজার টাকা।
এনএম