ত্বকের ফাটা দাগকে ইংরেজিতে স্ট্রেস মার্ক বলা হয়। এ ধরনের দাগ শারীরিক যন্ত্রণার কারণ না হলেও বেশ অস্বস্তি দেয়। শরীরে ফাটা দাগ একবার সৃষ্টি হলে আর যেতে চায় না। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
স্ট্রেচ মার্ক কী?
চিকিৎসকদের মতে, স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ হলো ত্বকের এমন ধরনের দাগ, যা ত্বক প্রসারিত বা অতিরিক্ত টান পড়ার কারণে তৈরি হয়। স্ট্রেচ মার্ক তৈরি হলে সাধারণত লালচে, গোলাপি, বেগুনি রঙের দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে তা হালকা হয়ে সাদা রঙের সরু দাগে পরিণত হয়।
সাধারণত পেট, বুক, তলপেট, উরু, নিতম্ব, বাহু, কাঁধ এসব স্থানে স্ট্রেস মার্ক বেশি হয়। পায়ের নিচের অংশে হাঁটু থেকে গোড়ালিতেও অনেকসময় স্ট্রেচ মার্ক দেখা যায়।

শরীর ফাটে কেন?
বিভিন্ন কারণে ত্বকে ফাটা দাগ সৃষ্টি হতে পারে। হঠাৎ ওজন বেড়ে গেলে এমনটা হয়। শরীরের সারফেস এরিয়া বা উচ্চতা এবং বয়সের তুলনায় ওজন অনেক বেড়ে গেলে স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেয়।
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীর দেহে ফাটা দাগ দেখা দেয়। কারণ এসময় দ্রুত বিকাশ হয়। ফলে ত্বকে অনেক দ্রুত টান ধরতে পারে এবং ত্বক ফেটে ফেটে যায়। কোলোজেন ফাইবারগুলো ভেঙে যাওয়ার কারণে অনেকসময় স্ট্রেচ মার্ক তৈরি হয়।

গর্ভাবস্থায় ত্বক প্রসারিত হওয়ার ফলে অন্তঃসত্ত্বা নারীর ত্বকে স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেয়। বিশেষ করে পেটে। সন্তান জন্মদানের পর পেট আগের অবস্থানে ফিরলেও এসব দাগ থেকেই যায়।
এছাড়া দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ-ক্রিম ব্যবহার করার ফলে চামড়া পাতলা হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ত্বকে ফাটা দাগ তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

শরীরের ফাটা দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়:
তেল, অ্যালোভেরা, লেবুর রসের মতো কিছু ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করে এই দাগ কমানো সম্ভব। কীভাবে ব্যবহার করবেন জেনে নিন।
১. তেল ম্যাসাজ:
ফাটা দাগের ওপর নিয়মিত তেল ম্যাসাজ করুন। এতে ত্বক ময়েশ্চারাইজড থাকে এবং দাগ হালকা হতে পারে। অলিভ অয়েল, নারকেল তেল বা ভিটামিন ই সমৃদ্ধ তেল ব্যবহার করতে পারেন।

২. অ্যালোভেরা:
শরীরের ফাটা দাগ দূর করতে ব্যবহার করতে পারুন অ্যালোভেরা। এর শাঁস বের করে ব্লেন্ড করে নিন। এই রস সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে ম্যাসেজ করুন। এতে ত্বক ময়েশ্চারাইজড হয়, দাগ হালকা হয়।
৩. কোকো বাটার ও শিয়া বাটার:
এই দুটি উপাদানই ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং স্ট্রেচ মার্ক ধীরে ধীরে হালকা করতে সাহায্য করে।

৪. লেবুর রস:
প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে লেবুর রস। এটি কালচে দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। তবে, লেবুর রস ব্যবহারের সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকা উচিত। তাই এই টোটকা রাতে ব্যবহার করবেন।
আরও পড়ুন-
৫. লেবু ও চিনির স্ক্রাব:
লেবুর রস ও চিনির মিশ্রণ স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের মৃত কোষ দূর হয় এবং দাগ হালকা হয়।

৬. চিকিৎসা:
লেজার চিকিৎসা, মাইক্রোডার্মাব্রেশন এবং কেমিক্যাল পিলিং এর মতো চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমেও ফাটা দাগ দূর করা যেতে পারে। তবে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
এনএম

