বাদলের ধারা ঝরার দিন এলো। বৃষ্টি মুখর দিন গোনার সময় হলো বুঝি! কেননা, আজ আষাঢ়ের প্রথম দিন। বাংলা বছরের তৃতীয় ঋতু হলো বর্ষাকাল। যা আষাঢ় ও শ্রাবণ, এই দুই মাস জুড়ে বিস্তৃত। আষাঢ় মানেই রিমঝিম বৃষ্টি, জমে থাকা পানিতে কাদায় মাখামাখি পথঘাট, মাঠে পানি জমে ধান রোপণের প্রস্তুতি। অথচ এবারের আষাঢ়ে প্রকৃতির সে চেনা রূপ এখনও ধরা দেয়নি।
পঞ্জিকার পাতা আষাঢ় এলেও নগরে নেই বৃষ্টির ছিটেফোটা। বাংলার রাজধানী ঢাকা বেশ কয়েকদিন ধরেই গুমোট। আকাশে মেঘের আনাগোনা থাকলেও বৃষ্টির দেখা নেই। রোদের তাপ, গরমের ভাপ আর শুষ্ক বাতাস যেন প্রকৃতির বর্ষা-ঘোষণাকে উপহাস করছে।
বিজ্ঞাপন

প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের বিদায়ের সুর বেজেছে। বর্ষার আগমন যেন অপেক্ষমাণ। আকাশে মেঘ জমছে, কিন্তু ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির বদলে ঝরছে ঘাম।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির দিনে গাছ লাগানো কি ভালো?
আষাঢ়ের বার্তাবাহক কদম ফুল ফুঁটে উঠছে ধীরে ধীরে। পল্লী গাঁয়ের প্রান্তরে কিংবা শহরের পার্কে, কদম গাছে সাদা-হলুদ গোলগাল ফুলগুলো জানান দিচ্ছে— বর্ষা এসে গেছে, শুধু বৃষ্টিটাই বাকি।
বিজ্ঞাপন

বর্ষাকাল: এক রোমান্টিক ঋতু
বাংলা সাহিত্যে বর্ষাকাল সবসময়ই রোমান্টিকতার প্রতীক। রবীন্দ্রনাথ থেকে জীবনানন্দ— কবিদের কলমে বৃষ্টির শব্দে গলে যাওয়া মন, কদমফুল হাতে দেখা সাক্ষাতের অপেক্ষা, বৃষ্টিতে ভেজা প্রেয়সীর কথা উঠে এসেছে বারবার। আষাঢ়-শ্রাবণ যেন হৃদয়ের জানালায় এক বিশেষ অনুভূতির মাস।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ফলের স্বাদ কি বদলে যায়?
যদিও এখনো বৃষ্টি শুরু হয়নি, তবুও মন জানে— এই ঋতুই ভালোবাসার, মেঘ বরণ করার, অপেক্ষার। কোনো এক বৃষ্টিভেজা বিকেলে হয়তো বারান্দার ধারে বসে কদমফুলের ঘ্রাণ নিতে নিতে এক কাপ চায়ে চুমুক দিয়ে অনেকেই খুঁজে পাবেন হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি।

নগরে বৃষ্টির অপেক্ষা...
বর্ষা তার নিজস্ব ছন্দেই আসে, কখনও একটু দেরিতে। এবারও হয়তো তাই। আষাঢ়ের শুরুটা রোদের হলেও, অচিরেই বৃষ্টি নামবে। তখন রাস্তায় ছাতা ও বৃষ্টির শব্দে আবারও ফিরে আসবে বর্ষার চেনা দৃশ্য।
আরও পড়ুন: জ্যৈষ্ঠে শ্রাবণের ধারা, বর্ষা কি এগিয়ে এলো?
আষাঢ় মানেই বর্ষার আনুষ্ঠানিক শুরু। প্রকৃতিতে এখনও না এলেও, মনে ও মননে বর্ষা জেগে আছে। কদমফুল ফুটছে, আকাশে মেঘ জমছে— সবই যেন জানিয়ে দিচ্ছে, অপেক্ষা আর বেশি দিনের নয়। বর্ষা আসবেই, তার রোমান্টিকতা নিয়েই। আর একবার শুরু হলে, আষাঢ়-শ্রাবণ বাংলার প্রকৃতি আর হৃদয়কে ভিজিয়ে দিয়ে যাবে আগের মতোই।
এজেড

