শীতকাল অনেকেরই প্রিয় ঋতু। হবে নাই বা কেন? হিম হিম বাতাস গায়ে মেখে গরম পিঠাপুলি খাওয়ার সময় এটি। পিকনিক থেকে শুরু করে উৎসবে মেতে ওঠার জন্যও শীতের বিকল্প নেই। কিন্তু এসময় শরীর যেন বেখেয়ালি হয়ে ওঠে। নানারকম স্বাস্থ্য জটিলতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। বিশেষত জ্বর, ঠান্ডা, কাশিতে ভোগেন সববয়সী মানুষ। আর তাই শীতে খেতে হয় বুঝেশুনে।
শীত এলে এমন সব খাবার খেতে হয় যেগুলো শরীর গরম রাখবে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। আর এমন খাবারগুলো এড়িয়ে যেতে হয় যেগুলো খেলে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা থাকে। অনেকেই মনে করেন শীতে কলা খেলে ঠান্ডা লাগে? আসলেই কি তাই? নাকি এটি একটি মিথ। চলুন জেনে নিই বিশেষজ্ঞের মত-
বিজ্ঞাপন

কলার পুষ্টিগুণ ও স্বাদ সম্পর্কে কমবেশি সবাই জানেন। এটি এমন একটি ফল যা সারাবছরই পাওয়া যায়। অনেকেই বলেন, কলা খেলে ঠান্ডা লাগে। তাই শীতকালে এই ফলটি খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু পুষ্টিবিজ্ঞানীরা এই ধারণাটিকে ভুল বলে দাবি করেন।
আরও পড়ুন- কলা ঝুলিয়ে রাখা হয় কেন?
কলার পুষ্টিগুণ
বিজ্ঞাপন
কলায় আছে পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, ফাইবার, এবং ম্যাগনেসিয়ানের মতো উপকারি সব পুষ্টি উপাদান। এসব উপাদান শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শীতকালেও কলা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করা সম্ভব। এমনটাই মত পুষ্টিবিদদের। কলা শরীরের শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে এবং সহজে হজম হয়।

কলা খেলে কি আসলেই ঠান্ডা লাগে?
বিভিন্ন মানুষের শরীরের প্রতিক্রিয়া আলাদা হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, কলা খেলে শরীরে ঠান্ডা লাগার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। বরং ঠান্ডা লাগার অনুভূতি অনেক সময় পরিবেশের কারণে হয়ে থাকে। হতে পারে সেটির কারণ ঠান্ডা আবহাওয়া বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা।
অর্থাৎ শীতের সময় কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকার কোনো কারণ নেই। বরং গরম পানির সঙ্গে কলা খেলে তা শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে পারে। তবে যারা ঠান্ডায় বিশেষভাবে সংবেদনশীল, তাদের কলার পাশাপাশি গরম খাবারও গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

শীতে যাদের কলা খাওয়া উচিত নয়
যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, যেমন- অ্যাজমা, নাকে পানি ঝরা, হাঁচি ইত্যাদি, তাদের ক্ষেত্রে কলা খেলে সমস্যা বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে কলা খাওয়ার পর ব্যক্তি যদি মনে করেন, তার সমস্যা বাড়ছে, তাহলে তা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
আরও পড়ুন- রাতে কলা খেলে কি ঘুম ভালো হয়?
কলায় পটাসিয়ামের মাত্রা বেশি থাকে। তাই যারা রেনাল ফেলিওরে ভুগছেন কিংবা পটাসিয়ামে অসুবিধা আছে তাদের কলা না খাওয়াই ভালো।

ডায়াবেটিস রোগীরাও কম পরিমাণে কলা খেতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা হবে না। কারণ কলায় থাকা ফাইবার শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, কলা খেলে হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে উপকার পাওয়া যায়। ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এই ফলটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়া মস্তিষ্ককে সজাগ রাখতে সহায়তা করে কলা। তাই অন্য কোনো স্বাস্থ্য জটিলতা না থাকলে শীতে কলা খেতে পারেন নিশ্চিন্তে।
এনএম

