চিকিৎসকরা যতই বলুক চিনি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, মন কি আর তা মানে? সামনে সরেস রসগোল্লা দেখলে দু-চারটি মুখে না পুরলে চলে না অনেকের। স্বাস্থ্যের কথা ভেবে অবশ্য বর্তমানে অনেকেই মিষ্টির প্রতি লোভে লাগাম টানছেন। চিনি ছাড়ার চেষ্টা করছেন। কেউ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে, কেউবা ডায়াবেটিসের ফাঁদে পড়ে।
এতকিছুর পরেও যদি মিষ্টির জন্য মন আনচান করে তাহলে কী করবেন? কোন সময় মিষ্টি খেলে শরীরের অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতি হবে? কোন সময়েই বা এমন কিছু খাওয়া একদমই উচিত নয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশেষজ্ঞের মত-
বিজ্ঞাপন

পুষ্টিবিদদের মতে, কার হজমশক্তি কতটুকু, কে কতটা শারীরিক কসরত করছেন, শরীরে কোনো অসুখবিসুখ আছে কি না— এসব কিছু দেখেই বলা যেতে পারে, তিনি ঠিক কতটা মিষ্টি খেতে পারবেন। কেউ যদি জিমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাম ঝরান অথবা খেলাধুলা করেন, তাহলে তাকে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে সামান্য মিষ্টি খেতেই হবে। কেননা এই শর্করাই তাকে পেশির শক্তি প্রদান করবে।
আবার যিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে কাজ করেন এবং বিন্দুমাত্রও শরীরচর্চা করেন না, তার জন্য একগাদা মিষ্টি খেয়ে ফেলাটা সত্যিই ক্ষতিকর।

বিজ্ঞাপন
মিষ্টি খাওয়ার উৎকৃষ্ট সময় কোনটি?
পুষ্টিবিদদের মতে, শরীরচর্চা করার ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা আগে মিষ্টি খেলে কোনো ক্ষতি নেই। কারণ যে ক্যালোরি শরীরে ঢুকছে, তা ব্যায়াম করলে ঝরে যাবে। যারা ওজন তুলে ব্যায়াম করেন কিংবা হাঁটাহাঁটি করেন, দৌড়ান, সাঁতার বা কার্ডিও করেন— এমন ব্যক্তিরা ব্যায়ামের আগে মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পারেন। এতে পেশির শক্তি বাড়বে।
মিষ্টি খাবার হিসেবে ফল খেলে ভালো। কলা, খেজুর, মধু বা বেরি জাতীয় মিষ্টি ফল খেতে পারেন। অত্যধিক চিনি দেওয়া কোনো পানীয় যেন খেতে যাবেন না। এতে শরীরের ক্ষতি বৈ উপকার হবে না।

শরীরচর্চার এক ঘণ্টা পরে সামান্য মিষ্টি খেতে পারেন। সেক্ষেত্রে কোনো প্রোটিন জাতীয় খাবারের সঙ্গে মিষ্টি কিছু খেলে ভালো। এতে পেশির শক্তিও বাড়বে, আবার ক্যালোরির ভারসাম্যও বজায় থাকবে।
একদিনে কতটুকু চিনি খাবেন?
সারা দিনে ৫ গ্রাম পর্যন্ত চিনি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা। চিনি খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন মানেই ওজন বাড়বে না কিংবা ডায়াবেটিস হবে না, এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে সামান্য মিষ্টি খেলে কোনো ক্ষতি নেই। এতে সারা রাতে যে পরিমাণে গ্লাইকোজেনের ঘাটতি হচ্ছে, তা পুষিয়ে যাবে।

তবে চিনি দেওয়া চা বা কফি না খেয়ে বরং গুড়, মিষ্টি ফল খেতে পারেন। এতে লাভ হবে বেশি। সন্দেশ, রসগোল্লা খেতে মন চাইলে দুটো মিলের মাঝে খেতে হবে। অর্থাৎ সকাল আর দুপুরের খাবার মধ্যবর্তী সময়ে কিংবা দুপুর ও রাতের খাবারের মধ্যবর্তী সময়ে মিষ্টি খেতে পারবেন। তবে ভাজা মিষ্টি না খাওয়াই ভালো।
কোন সময় মিষ্টি খাওয়া সবচেয়ে ক্ষতিকর?
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভুলেও মিষ্টি খাবেন না। কারণ, শর্করা মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণে বাধা দেয়। ফলে রোজ রাতে মিষ্টি খেলে অনিদ্রার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এনএম

