শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

সন্তান বড় হলে কেন মায়ের কথা শোনে না

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২২, ০৯:৫৭ এএম

শেয়ার করুন:

সন্তান বড় হলে কেন মায়ের কথা শোনে না

ছোটবেলা থেকেই বাধ্য সন্তান ছিল ইলা। মায়ের সব কথা শুনত। অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলত সব। কিন্তু বয়ঃসন্ধিতে পা রাখতেই সব কেমন যেন বদলে গেল। এখন আর মায়ের কথা একদমই শুনতে চায় না সে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা কিংবা একা থাকতে ভালোবাসে।– প্রায় প্রতিটি ঘরেই মিলবে এমন দৃশ্য। বয়ঃসন্ধি শুরু না হতেই বাধ্য সন্তান হয়ে যায় অবাধ্য। তবে এর জন্য কি বয়স দায়ী? কেন এমনটা হয়ে থাকে? 

সম্প্রতি এক দল বিজ্ঞানী বের করেছেন এসব প্রশ্নের উত্তর। জানিয়েছেন, ইচ্ছে করে নয়। বরং, বড় হলে মায়ের কথা শুনতে না চাওয়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। 


বিজ্ঞাপন


জন্মের আগে থেকেই মায়ের কণ্ঠস্বরের সঙ্গে কীভাবে সন্তানের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তা নিয়েও গবেষণা করা হয়েছিল। এরই প্রসারিত রূপ বলা যায় নতুন গবেষণাটিকে। বয়ঃসন্ধিকালের বিভিন্ন ব্যবহার খতিয়ে দেখা হয়েছে এতে। 

teenageস্ট্যান্ডফোর্ড স্কুল অফ মেডিসিনের পক্ষ থেকে গবেষণাটি করা হয়েছে। এটি প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল অফ নিউরোসায়েন্সে। এই গবেষণায় বাচ্চারা শৈশবে যেমন ব্যবহার করে, বড় হয়ে কেন তা পাল্টে যায় তার প্রবণতা চিহ্নিত করে নিউরোবায়োলজিক্যাল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এজন্য শিশুদের মস্তিষ্কের এমআরআই স্ক্যান করেন তারা। চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে এর ফলাফলে। 

গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, শৈশবে শিশুরা সবচেয়ে বেশি পরিচিত থাকে মায়ের কণ্ঠস্বরের সঙ্গে। তাই মায়ের সঙ্গে তাদের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিশুর বয়স যত বাড়তে পারে, অর্থাৎ শিশু যত বয়ঃসন্ধির দিকে আগাতে থাকে তখন অন্য স্বরের সঙ্গে তার পরিচিতি বাড়ে। মস্তিষ্কের সক্রিয়তাও সেভাবে বদলাতে থাকে। ফলে, এক ধরনের স্বর বা কণ্ঠের প্রতি তারা আর আকৃষ্ট থাকে না। অন্য কণ্ঠস্বরের প্রতিও মনোযোগী হয়ে ওঠে। 

teenageস্বাভাবিকভাবে শিশু বয়ঃসন্ধিকালে কেবল মায়ের কথা শোনায় সীমাবদ্ধ থাকে না। তাই সে অন্যদের নানা কথা শুনতেও আগ্রহী হয়। ফলে শিশু যত বড় হতে থাকে, মায়ের কথা শোনার প্রবণতা তত কমতে থাকে। 


বিজ্ঞাপন


বিজ্ঞানীরা কিন্তু শিশুর এই পরিবর্তনকে ভালো চোখেই দেখছেন। তাদের মতে। বাচ্চা যে ম্যাচুরিটি বা বোধবুদ্ধির স্বাস্থ্যকর পরিণতির দিকেই আগাচ্ছে, এই প্রবণতা তারই প্রমাণ দেয়। এই পরিবর্তনের অর্থ বাচ্চাটি পৃথিবীর বৃহত্তম ক্ষেত্রের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে। 

teenageপরিবারের বাইরে বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে যত পরিচিত বৃত্ত বাড়তে থাকে, তত অজানা জিনিস, নতুন ঘটনা বা তথ্য জেনে নেওয়ার প্রবণতা বাড়তে থাকে। জীবনের এই পর্যায়ে একজন মানুষ পরিণত হয়ে ওঠে। তার চিন্তাভাবনা, বোধবুদ্ধি অনেকটা বদলে যায়। একইসঙ্গে পরিবর্তন আসে উত্তর দেওয়া বা প্রত্যুত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রেও। 

সবকিছু মিলিয়ে বলা যায়। বড় হলে বাচ্চারা মায়ের কথা শোনে না- এমন অভিযোগ আসলে ঠিক নয়। মায়ের কথা ছাড়াও অন্যান্যদের কথা শোনার দিকে মনোযোগ যায় তাদের। আর মনের এই পরিবর্তন স্বাস্থ্যকর লক্ষণই বলা যায়। 

এনএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর