শীতকাল না এলেও শীতের প্রকোপ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। সেসঙ্গে বেড়েছে ভাইরাল ইনফেকশনের সমস্যা। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক— সবাই আক্রান্ত হচ্ছেন জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যায়। কারো কারো ক্ষেত্রে যা শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত পৌঁছায়।
শীতে সুস্থ থাকতে আর ভাইরাল সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে তাই আগাম প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। চলুন জানা যাক ভাইরাল সংক্রমণ থেকে বাঁচতে কী করবেন-
বিজ্ঞাপন
ভাইরাল সংক্রমণ ছড়ায় কীভাবে?
সাধারণত ৩ উপায়ে ভাইরাল সংক্রমণ ছড়ায়।
১. দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে।
বিজ্ঞাপন
২. অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে।
৩. শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ভাইরাল সংক্রমণ মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে।
ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক, প্রোটোজোয়া ইত্যাদি অণুজীবের মাধ্যমে ভাইরাল ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ে। এর কারণে সর্দি, কাশি, জ্বর, জন্ডিস, ডায়রিয়া-বমি, পেট সংক্রান্ত সমস্যা, ত্বক ও চুল সংক্রান্ত নানা সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও সেরিব্রাল ফিভার, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, সোয়াইন ফ্লু, এইচ১এন১ ইনফ্লুয়েঞ্জা, জন্ডিস, এইচআইভি ইত্যাদির মতো বিপজ্জনক রোগও হতে পারে।
রোগের লক্ষণ কী?
ভাইরাল ইনফেকশনের কারণে যেসব লক্ষণ দেখা দেয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
জ্বর
শরীর ব্যথা
দুর্বল লাগা
চোখ জ্বালা
গলা জ্বালা
ঘন ঘন হাঁচি
মাথা ভারী লাগা
নাক বন্ধ হওয়া
নাক জ্বালা
চোখ লাল হওয়া
চোখ থেকে পানি পড়া
কাশি
চুলকানি
এছাড়াও ত্বকে ফুসকুড়ি, শরীরে লাল রঙের ফুসকুড়ি, ব্রণ, চুল পড়া, শ্বাস নিতে অসুবিধা, ফুসফুসে সংক্রমণ, ঠাণ্ডা লাগা, বুকে ব্যথা, অ্যালার্জি, অস্থিরতা ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
ভাইরাল সংক্রমণ হলে কী হয়?
ভাইরাল সংক্রমণ দেহের হজম প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। এর কারণে পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি, ক্ষুধা হ্রাস, বদহজম ইত্যাদি হতে পারে। কখনও কখনও সংক্রমণ শরীরের স্নায়ুতন্ত্র এবং মস্তিষ্ককেও প্রভাবিত করে। ভাইরাল সংক্রমণের কিছু গুরুতর লক্ষণ হলো- জ্ঞান হারানো, খিঁচুনি, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, কোমা ইত্যাদি।
কীভাবে রোগ নির্ণয় করা যায়?
প্রথমে ডাক্তারের পরামর্শে ক্লিনিকাল পরীক্ষা করা হয়। প্রয়োজনে চিকিৎসক কিছু ল্যাবরেটরি পরীক্ষাও করতে দিতে পারেন। রক্ত, থুতু, প্রস্রাব, সিএসএফ-এর (কোমরের অংশ থেকে নেওয়া জল) মাধ্যমে ভাইরাস অ্যান্টিজেন, অ্যান্টিবডি এবং জেনেটিক পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী এক্স-রে, সোনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান, এমআরআই-এর মতো পরীক্ষাও করা হয়।
ভাইরাল সংক্রমণ হলে করণীয়
রোগীকে সবসময় মাস্ক পরে থাকতে হবে। যতটা সম্ভব বিশ্রাম করা উচিত। শ্বাসের কিছু ব্যায়াম আছে যা করলে ফুসফুস সুরক্ষিত থাকে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। সময়মতো প্রতিরোধমূলক ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়াও খাবার আগে হাত ধোয়া জরুরি। বাইরের খাবার ও পানীয় যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
এনএম