আর্থ্রাইটিস বলতে সাধারণত অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টের প্রদাহকেই বোঝানো হয়। বাংলায় যা বাত নামে পরিচিত। এটি নির্দিষ্ট কোনো রোগ নয়। এক বা একাধিক জয়েন্টকে আক্রান্ত হতে পারে এই সমস্যা থাকলে। বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি ৫ জনের একজনই বাতে আক্রান্ত।
অর্থাৎ, বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ আর্থ্রাইটিস বা বাতে ভুগছেন। ১৯৯৬ সাল থেকে শুরু হয় বিশ্ব আর্থ্রাইটিস দিবস। প্রতি বছর ১২ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে এই দিনটি উদযাপন করা হয়। আর্থ্রাইটিস বা বাত বিষয়ে সচেতনতা প্রচার করতেই দিবসটির সূচনা।
বিজ্ঞাপন
বাত কিন্তু একরকম নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে এর নানা প্রকারভেদ রয়েছে। বাত কোনো নির্দিষ্ট অঙ্গের ব্যথা নয়। বরং নানা অঙ্গেই এটি হতে পারে। এমনকি আঙুলের গাঁটে গাঁটে যদি ব্যথা হয় তবে তাকেও বাত বলা হয়। কোনো আঘাত না লাগলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শরীরে নানা হরমোন ওঠানামা করে। পাশাপাশি দুর্বল হতে থাকে হাড় ও মজ্জাও। ঠিক এসময় থেকেই অনেকে বাতের ব্যথায় ভুগতে থাকেন।
বিজ্ঞাপন
প্রকার অনুযায়ী এই সমস্যার চিকিৎসা দেওয়া হয়। অনেকে বাত বলতে কেবল হাঁটুর ব্যথাকে বোঝেন। আসলে তা ঠিক নয়। এই রোগ নিয়ে ভুল ধারণাগুলো ভাংতেই দিবসটি পালন করা হয়।
বাত ব্যথায় ভুগলে কী খাবেন?
দুধ, দই ও পনিরের মতো দুগ্ধজাত খাবার। এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি থাকে। যা হাড় শক্তিশালী করে।
খাদ্যতালিকায় রাখুন রুই, টুনা ও স্যামন মাছ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সপ্তাহে অন্তত ২ দিন ৮৫ থেকে ১১৩ গ্রাম এমন মাছ খাওয়া প্রয়োজন।
অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও আর্থ্রাইটিস—উভয়ের জন্যই বাদাম বেশ উপকারী। আখরোট, পেস্তা ও কাঠবাদামের মতো ড্রাই ফ্রুট খান। এসবে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক, ভিটামিন ই ও ফাইবার।
শিমের বীজে রয়েছে প্রোটিন, লৌহ, জিংক ও পটাশিয়াম। তাই বাতের কারণে ফোলাভাব কমাতে এটি খেতে পারেন।
কমলালেবু, পাতিলেবু, মুসম্বি ও আঙুরে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। অস্টিওআর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিয়মিত এসব ফল খেতে পারেন। এতে ব্যথা-যন্ত্রণা থেকে অনেকটাই মুক্তি পান। হাড়ের ক্ষতি কমায় এসব খাবার।
পলিফেনল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ পানীয় গ্রিন টি। এটি ব্যথা কমায় ও তরুণাস্থির ক্ষতির মাত্রা কমায়। গ্রিন টি’র অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে হাড়কে সুরক্ষা দেয়।
বাত ব্যথায় ভুগলে কী খাবেন না?
ইউরিক অ্যাসিডের উৎস টমেটো। এই অ্যাসিড হাড়ের জোড় বা জয়েন্টে জমা হয়, যা আর্থ্রাইটিসের ব্যথা বাড়ায়। তাই টমেটো খাবেন না।
বাতের ব্যথায় ভুগলে ফসফরাসসমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। লাল মাংস অর্থাৎ গরু ও খাসির মাংস এড়িয়ে চলুন। এতে শরীরে অতিরিক্ত ফসফরাস জমা হয় এবং ক্যালসিয়াম হারিয়ে যায়।
এছাড়া চিনি, কফি এড়িয়ে চলা ভালো। মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে সেটিও ছাড়তে হবে। বেগুন, লাল মরিচ, আলু এগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যালকালোয়েডস। যা প্রদাহ তৈরি করে। তাই বাতের ব্যথা থাকলে এগুলো এড়িয়ে চলুন।
এনএম