মানবদেহের অন্ত্রে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়া শারীরবৃত্তীয় নানা কাজের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখা, খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা থেকে শুরু করে বিপাকহারের মান উন্নত করা— সবকিছুর নেপথ্যে আছে অন্ত্রের স্বাস্থ্য। পেটের স্বাস্থ্যের ওপর অনেককিছুই নির্ভর করে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, কোনো ব্যক্তি অস্টিয়োপোরোসিসে আক্রান্ত হবেন কি না, সেটি নির্ভর করে ওই ব্যক্তির পেটের স্বাস্থ্যের উপর। ‘ফ্রন্টিয়ারস ইন এন্ডোক্রিনোলজি’ জার্নালে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়েছে, অন্ত্রে থাকা তুলনায় খারাপ দুটি ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে বয়সকালে হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধির সংযোগ রয়েছে। অস্টিয়োপোরোসিসের মতো সমস্যা বেড়ে যাওয়ার আরও একটি কারণ হলো শরীরচর্চার অভাব এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন না খাওয়া।
আরও পড়ুন- হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে চান? মানুন এসব নিয়ম
এ বিষয়ে গবেষণার প্রধান, চিকিৎসক ডগলাস পি কেল বলেছেন, ‘অন্ত্রে থাকা মাইক্রোবায়োটার সঙ্গে হাড়ের ক্ষয়ের একটি যোগসূত্র পেয়েছি আমরা। বয়স বাড়তে থাকলে হাড়ের ঘনত্বে এর প্রভাব ধরা পড়ে। শুধু তাই নয়, অন্ত্রের স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে হাড়ের পুরো কাঠামোটির স্বাস্থ্য।’
তবে এই বিষয়ে বিস্তর গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি। হাড় ভালো রাখার উপায় কী? চিকিৎসকরা বলছেন, হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপাদান হলো, ক্যালশিয়াম এবং ভিটামিন ডি। বিপাকের মাধ্যমে এই উপাদান দুটোকে সঠিকভাবে কাজ করাতে সাহায্য করে অন্ত্রে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়া।
এছাড়া বিপাকক্রিয়ার সময় অন্ত্রে বিশেষ কিছু ফ্যাটি অ্যাসিড উৎপন্ন হয়। যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এর প্রভাবে হাড় শক্ত ও মজবুত হয়। কিন্তু যখন ব্যাকটেরিয়াগুলোর মধ্যে ভারসাম্যের অভাব দেখা দেয় তখনই প্রদাহের মাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়।
নিয়মিত শরীরচর্চা ও প্রোবায়োটিক যুক্ত খাবার খেলে অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়তে পারে। যা পরবর্তী কালে হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করবে। তাই খাদ্যতালিকায় সঠিক খাবার রাখুন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। এতে অন্ত্র ভালো থাকবে। সেসঙ্গে কমবে অস্টিয়োপোরোসিসের ঝুঁকি।
এনএম
