শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

রান্নায় স্বাদ বাড়ায় সুগন্ধি কারি পাতা

ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৫৪ এএম

শেয়ার করুন:

রান্নায় স্বাদ বাড়ায় সুগন্ধি কারি পাতা
কারি পাতা | ছবি: সংগৃহীত

সুগন্ধি গাছ বা মসলা হিসেবে কারি পাতা অত্যন্ত জনপ্রিয়। দক্ষিণ ভারতের প্রায় প্রত্যেকটি রান্নায়ই কারি পাতার ব্যবহার দেখা যায়। আমাদের দেশেও অনেকেই রান্নায় কারি পাতা ব্যাবহার করে থাকেন। রান্নায় স্বাদ ঘ্রাণ বাড়ানো ছাড়াও কারি পাতার বিভিন্ন ব্যবহার রয়েছে। এটি যেমন রুচিবর্ধক, একই সাথে আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

রান্নায় কারি পাতা
কারি বা ঝোল তরকারিতে এই পাতা ব্যবহার করা হয় বলে এর ইংরেজি নাম— কারি লিফ (curry leaf), বাংলায় কারি পাতা। এই পাতা দেখতে অনেকটা নিম পাতার মতো। নিমভুত, বারসাঙ্গা বা মিষ্টি নিম পাতা নামেও এটি পরিচিত। এতে সালফারঘটিত এক ধরনের উদ্বায়ী তেল থাকার কারণে সুন্দর ঝাঁঝাল গন্ধ আসে। কাঁচা পাতা ডললে পাতা থেকে গোলমরিচ, লবঙ্গ, মরিচ, আদা ইত্যাদি মসলার মিশ্রিত এক প্রকার ঘ্রাণ বের হয়। এই সুগন্ধির জন্যই কারিপাতা রান্নায় মসলাপাতা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।


বিজ্ঞাপন


curry-leafএই পাতাগুলোকে টক রুচিবর্ধক হিসেবে দক্ষিণ এবং পশ্চিম-তীরবর্তী ভারতীয় রান্না এবং শ্রীলঙ্কান রান্নায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়, বিশেষত ঝোল জাতীয় রান্নায়, সাধারণত পেঁয়াজ কুচির সাথে রান্নার প্রথম পর্যায়ে এটি ভেজে নেয়া হয়।

যদিও সাধারণভাবে ঝোল জাতীয় রান্নায় এটির ব্যবহার সবচেয়ে বেশি, কারি গাছের পাতা অন্যান্য অনেক রান্নায় ভিন্ন স্বাদ যোগ করার জন্য ব্যবহার করা যায়। কম্বোডিয়ায় এর পাতা খোলা আগুনে সেঁকে বা ঝলসিয়ে নেয়া হয় যতক্ষণ না এটি মুড়মুড়ে হয়ে যায়, তারপর এটি গুড়ো করে মাজু কুরেং নামের একটি টক স্যুপে ব্যবহার করা হয়।

আমাদের দেশীয় স্টাইলে রান্না খাবার— গরুর মাংস, মুরগীর মাংসসহ, ডাল বা বিভিন্নরকম সবজি রান্নায় কারি পাতার ব্যাবহারে বাড়ে স্বাদ এবং ঘ্রাণ দুটোই।

ঔষধ হিসেবে কারি পাতা ব্যবহার
কারি পাতা খাওয়ারও অনেক উপকারিতা আছে। এই পাতা খেলে চুলের গোড়া মজবুত হয়। তাই রান্নায় কিংবা প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে যদি দুটো কারি পাতা চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারেন তাহলে চুল পড়া থেকে মুক্তি পাবেন। এত গুণ যে গাছটির সেই গাছটি যদি আপনি বাড়িতেই টবের মধ্যে চাষ করতে পারেন তবে মন্দ হয় না।


বিজ্ঞাপন


কারি পাতা, গাছ, শেকড় সবই ভেষজ গুণসম্পন্ন। আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় কারি পাতা। বিশ্বাস করা হয় এতে বহুমূত্র রোগ (ডায়াবেটিস) নিরোধক গুনাগুণ আছে।

curry-leafএ গাছের শেকড় অর্শ রোগে বেশ উপকারি। আমাশয় ও ডায়রিয়া সারাতেও কারি পাতা ওস্তাদ। কয়েকটা সবুজ পাতা চিবিয়ে খেলে এটা সেরে যেতে পারে। পাতা সেঁকে ও তা থেকে ক্বাথ তৈরি করে খেলে বমিভাব দূর হয়। শরীরের কোথাও কোনো বিষাক্ত পোকা কামড়ালে কাঁচা কারি পাতা হলে সেখানে লাগালে দ্রুত উপশম হয়। এছাড়াও এর বীজ হতে যে তেল পাওয়া যায় তার গন্ধ অনেকটা নারিকেল তেলের মতো আর স্বাদ মরিচের মতো ঝাঁঝালো।

কোথায় পাবেন কারি পাতা?
কারি পাতা সাধারণত সব এলাকায় পাওয়া যায় না। আমাদের দেশের বিভিন্ন বাজারে মসলা বা সবজির দোকানগুলোতে এটি পাওয়া যায়। ত‌বে যে‌কোনও বড় নার্সা‌রি থে‌কে কা‌রি পাতার চারা কি‌নে ট‌বে লা‌গি‌য়েও নিজের রান্নায় ব্যবহারের জন্য এই গাছ চাষ করা যেতে পারে। কারণ সব রকম আবহাওয়াতেই কারি পাতা জন্ম নিতে পারে।

তবে জেনে রাখা ভাল যে— গাছ থেকে ছেঁড়ার পর এই পাতা খুব অল্প সময় তাজা থাকে এবং এগুলো রেফ্রিজারেটরেও সংরক্ষণ করা যায় না। এদের শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায় তবে এতে এর সুগন্ধ কিছুটা কমে যায়।

এএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর