বাঙালির রোজকার খাবারের কথা বললেই চলে আসে ভাত আর ডালের কথা। সারাদিনের পরিশ্রম শেষে খাবার পাতে এক মুঠো গরম ভাত আর একটু ডাল পেলেই যেন শান্তি। এমন কোনো অঞ্চল নেই যেখানে ডাল-ভাত খাওয়া হয় না। সঙ্গে ভাজি, ভুনা কিংবা মাছ থাকলে জমে যায় পুরো আয়োজন।
ভাত আর ডালের কথা বললেই মনে হয় এটি আমাদের একান্তই নিজস্ব খাবার। তাইতো বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নে আমরা বলে উঠি- ‘দুটো ডাল-ভাত খাওয়ার আমন্ত্রণ জানাই’। কিন্তু যদি শোনেন এই খাবারটির সূচনা বাঙালির হাত ধরেই হয় নি?
বিজ্ঞাপন

জি হ্যাঁ। যতই গর্ব করি না কেন খাবারের তালিকায় থাকা বহুল পরিচিত এই খাবারটি বাঙালি খাবার নয়। এমনকি ভারতীয় খাবারও নয় এটি। তাহলে কাদের হাত ধরে আগমন ঘটলো এই খাবারের? জানা যায়, ডাল-ভাতের চল এসেছে নেপাল থেকে।
ভাত আর ডালের কম্বিনেশন প্রথম উদ্ভাবিত হয়েছিল নেপালে। ডাল ভাত (মসুর ডাল ও ভাতের সম্মিলিত খাবার): বস্তুত নেপালের ঐতিহ্যবাহী খাবার। যার আক্ষরিক অর্থ ‘মসুর স্যুপ’ (ডাল) ‘সেদ্ধ চাল’ (ভাত)। হিমালয় সংলগ্ন অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় খাবার এটি। নেপালের অঘোষিত জাতীয় খাবারও বলা যায় একে।

বিজ্ঞাপন
নেপালে কয়েক প্রজন্ম ধরে চলে আসছে এই খাবার খাওয়ার প্রচলন। পরবর্তীকালে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও পৌঁছে যায় এই খাবার। এরপর খুব দ্রুত হয়ে ওঠে প্রিয় প্রধান খাদ্য। বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশ, মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ খাবার খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়েছিল।
ডাল ভাত কোথায় থেকে এসেছে তা তো জানলেন। এখন চলুন জানা যাক এই খাবার খাওয়ার কিছু উপকারিতা-

১ মসুর ডালে রয়েছে ভালো পরিমাণ অ্যামিনো অ্যাসিড। মসুর ডাল ও ভাত একসঙ্গে খেলে ভালো পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়।
মসুর ডাল ও ভাত উভয়ই ফাইবার সমৃদ্ধ। এই খাবার দ্রুত হজম হয়। ফাইবারের উপস্থিতি হজমে উন্নতি করে। সাদা চালের পরিবর্তে ব্রাউন রাইসের ভাত খেলে বেশি উপকার মিলবে। বাদামি চালে সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় লবণ রয়েছে।

ডাল প্রোটিনের প্রধান উৎস। এতে থাকা ফোলেট হার্টের সুরক্ষায়ও সহায়ক।
অনেকে মনে করেন, ভাত খেলে ওজন বাড়ে। এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। মসুর ডাল ও চাওয়ান খেলে দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা থাকে। যার কারণে সারাদিনে কিছু খাওয়ার প্রয়োজন হয় না এবং অতিরিক্ত ক্যালরিও জমা হয় না।
এনএম

