যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবর্তিত হয় মানুষের ফ্যাশনের ধারা। একসময় দামি গয়না বলতেই উঠে আসত সোনার কথা। বিয়ে কিংবা বাগদানে ব্যবহার করা হতো সোনা বা রূপার আংটি, গয়না। এখন সেই স্থান দখল করছে হীরা। ভারী গয়নার পরিবর্তে ফ্যাশনাবেল হীরার গয়না পছন্দ করছেন অনেকে।
তবে দামী এই পাথরটির গয়না কেনার আগে কিছু বিষয় অবশ্যই জানা জরুরি। হয়তো নকল হীরা কিনে ঠকতে হবে।
বিজ্ঞাপন

হীরার গহনার ব্যবহার
বিয়ের অনুষ্ঠানে আংটি বা নাকফুল হিসেবে হীরার গয়না ব্যবহার করা হয়। সার্মথ্যবান মানুষদের অনেকেই সবসময় পরিধানের উদ্দেশ্যে হীরার আংটি ব্যবহার করেন। সূক্ষ্ম নকশার হীরার গহনা দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমন রুচির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
নারীরা সবচেয়ে বেশি কেনেন হীরার নাকফুল আর আংটি। কেউ কেউ ব্রেসলেট বা হীরার ছোট্ট কানের দুলও ব্যবহার করেন। ঠিকমতো যত্ন নিতে পারলে হীরার গয়না সারাজীবনই নতুনের মতো থাকে। ভারী কাজ করার সময় হীরার আংটি না পরাই ভালো। হীরার গয়না ব্যবহার শেষে আলাদা বক্সে টিস্যু পেঁচিয়ে রাখতে হয়। তাহলে এটি সবসময় উজ্জ্বল থাকে।
বিজ্ঞাপন

ক্যারেট হীরা সমান ০.২ গ্রাম। এই ১ ক্যারেট হীরাকে সেন্ট হারে বিক্রি করা হয়। আকারের ওপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয় হীরার দাম। দেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শো রুমে হীরার রিং, এয়ার রিং, নোস পিন, লকেট, ব্রেসলেট, নেকলেস, চুড়ি সবই পাওয়া যায়। দাম ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে কোটি টাকা পর্যন্ত।
আসল হীরা চেনার উপায়
আলোর পরীক্ষা
হীরাতে আলো ফেলুন। এটি খাঁটি হলে এর ভেতরে ধূসর ও ছাই রঙের আলোর ছটা দেখতে পাবেন। আর বাইরের দিকে রংধনুর রঙের প্রতিফলন দেখতে পাবেন।
পত্রিকা পরীক্ষা
পত্রিকার ওপর আসল হীরা রাখলে এর ভেতরে পত্রিকার কালো রঙের লেখার কোনো প্রতিসরণ ঘটবে না। কিন্তু নকল হীরার মধ্যে কালো লেখার অক্ষর দেখা যেতে পারে।
আতসি কাচ পরীক্ষা
লোপের ভেতর দিয়ে হীরা পরীক্ষা করা যায়। লোপ হলো এক ধরনের বিশেষ ম্যাগনিফায়িং গ্লাস (আতসি কাচ)। লোপের মাধ্যমে যখন কয়েকটি হীরা দেখবেন, তখন একেকটি একেকরকম লাগবে। আসল হীরা মোটেও নিখুঁতভাবে মসৃণ হয় না। কিন্তু নকল হীরা একেবারে নিখুঁত ও মসৃণ হবে।

লোপের মাধ্যমে যখন আসল হীরার ধার দেখবেন, তখন এর ধারগুলো বেশ ধারালো বলে মনে হবে। নকল হীরার ধারগুলো গোলাকার বা মসৃণ হয়। হীরার খুঁত ও আকার বুঝতে আকৃতির ওপর ১০ পাওয়ারের অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করলে তা নির্ণয় করা যায়।
গরম হাওয়া পরীক্ষা
বাথরুমের আয়নায় নাক-মুখের নিঃশ্বাস ফেললে আয়নাটি ঝাপসা হয়ে যায়। একইভাবে হীরায় মুখের গরম বাতাস দিন। এটি কুয়াশাচ্ছন্ন বা ঝাপসা হলে বুঝবেন আসল। হীরা যদি আসল হয় তবে এই ঝাপসা দূর হতে বেশ সময় লাগবে। আর হীরাটি যদি নকল হয়, তবে খুব দ্রুত ঝাপসা ভাবটি চলে যাবে।

সবসময় ব্র্যান্ডের দোকান থেকে হীরার গয়না কেনার চেষ্টা করুন। হীরার মান উল্লেখ করে ওয়ারেন্টি কার্ড বুঝে নিন ও সংরক্ষণ করুন। প্রয়োজনে পেশাদার গেমোলজিস্ট দিয়েও আসল হীরা পরীক্ষা করে নিতে পারেন।
এনএম

