বয়ঃসন্ধির পর থেকে বিভিন্ন পর্যায়ে নারীর দেহের অভ্যন্তরে শারীরবৃত্তীয় নানা পরিবর্তন ঘটতে থাকে। ঋতুচক্র বা পিরিয়ড শুরু, সন্তানধারণ এবং ঋতুবন্ধ বা মেনোপজ— তিনটি প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হরমোন। যদি কোনো কারণে এই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, তবে তার ছাপ পড়ে শরীরে।
মেনোপজ কী?
বিজ্ঞাপন
নারী দেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া মাসিক বা ঋতুস্রাব। তবে এটি একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত চলে। সাধারণত ৪৫ থেকে ৫৫ বছর পর ঋতুচক্র স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এই ধাপটিকেই মেনোপজ বলে। যদি কারো যদি ১২ মাসের বেশি সময় ধরে ঋতুস্রাব /মাসিক বন্ধ থাকে তাহলেই ধরে নিতে হবে এটি মেনোপজ।
যখন মেনোপজ শুরু হয় তখন নারীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বকোষ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এসময় নারীদেহে বিভিন্ন প্রজননের হরমোন কমে যায়। যার প্রভাব পড়ে নারী শরীরে।
মেনোপজে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে কেন?
বিজ্ঞাপন
চিকিৎসকদের মতে, একটি বয়সের পর, বিশেষ করে ঋতুবন্ধের পর মহিলাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর পেছনে দায়ী হরমোন। নারী যখন মেনোপজের সময়ে পৌঁছায় তখন শরীর থেকে ‘ইস্ট্রজেন’ হরমোনের ক্ষরণ কমতে থাকে। ফলে রক্তে খারাপ কোলেটেরলের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।
এই খারাপ কোলেস্টেরল বা ‘এলডিএল’ রক্তবাহিকাগুলির পথ ক্রমশ সরু করে দেয়। ফলে রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয়। এই কারণেই হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়তে থাকে।
হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে করণীয় কী?
মেনোপজের পর সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের অভ্যাস করতে হবে। পাশাপাশি মানতে হবে কিছু বিষয়-
১। বয়স ৪০ পেরুলেই হলেই নিয়মিত কোলেস্টেরল পরীক্ষা করাতে হবে। এতে দ্রুত শারীরিক সমস্যা ধরা পড়বে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
২। বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী বিএমআই বা ‘বডিমাস ইনডেক্স’-এর মান যেন ২৫-এর মধ্যে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৩। সুস্থ থাকতে শরীরচর্চার বিকল্প নেই। প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করতেই হবে। সকাল আর সন্ধ্যা দুইবেলা ব্যায়াম করতে পারলে আরও ভালো।
৪। খাবার পাতে বেশি মাত্রায় উদ্ভিজ্জ প্রোটিন রাখতে হবে। সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের বাদাম এবং বীজ খেতে পারলে ভালো হয়।
৫। কৃত্রিম চিনি মেশানো কোল্ড ড্রিংক্স খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
ছোটোখাটো এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে মেনোপজের পরও সুস্থ থাকা সহজ হবে।
এনএম