গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করার দায়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান ছাড়াও ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই মেয়রের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে আদালত অবমাননার এক আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
আজ আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
পরে আদালত থেকে বেরিয়ে মনজিল মোরসেদ ঢাকা মেইলকে জানান, ঢাকার রাস্তার পাশে ভবন তৈরিতে রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত লে-আউট প্ল্যানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও অনেক ভবন মালিকেরা গাড়ি পার্কিংয়ের নির্ধারিত জায়গায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান/দোকান/বসবাস করে। আর তাদের গাড়িগুলো ভবনের সামনের রাস্তায় পার্কিং করায় ঢাকা শহরে মারাত্মক জ্যামের সৃষ্টি হয়।
>> আরও পড়ুন: আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি নুর মিয়া, সম্পাদক খোরশেদ আলম
মনজিল মোরসেদ জানান, সড়কে যানজট দূরীকরণে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে আইনজীবী ছারোয়ার আহাদ চৌধুরী একটি রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি করে ২০১৯ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্ট ৩০ দিন সময় দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে কার পার্কিংয়ের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেন। ওই সময় বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর এবং বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
বিজ্ঞাপন
সেই রায়ে আদালত বিবাদীদের (ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, রাজউকের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা) ৬ মাসের মধ্যে ভবনের কার পার্কিং এলাকা থেকে দোকান/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান/স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি এর খরচ মালিকের কাছ থেকে আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়াও রায়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতেও বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ওই বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনাও দেওয়া হয়।
>> আরও পড়ুন: মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত ছালাম
পরবর্তীকালে আদালতের এসব নির্দেশনা প্রতিপালন না হওয়ায় এইচআরপিবির পক্ষে সংশ্লিষ্টদের নোটিশ প্রদান করা হয়। সেই নোটিশে সাত দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু যানজট নিরসনে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় হাইকোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আজ আদালত ঢাকার দুই সিটির মেয়র ও রাজউকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে রুল জারি করেন। পাশাপাশি উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়ন না করায় তাদের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ছাড়াও রাজউকের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
এআইএম/আইএইচ
