ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগে তার অফিস ‘ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার’ রেকি করা সেই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কবির ওরফে দাঁতভাঙা কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামান এই আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
কবির ওরফে দাতভাঙা কবির হাদিকে গুলি করা মূল অভিযুক্ত ফয়সাল কবিরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতি। তিনি আদাবর এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বলে জানা গেছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে এই কবিরকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলী এলাকায় একটি ইটভাটার ছনের ঘর থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
এরপর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে তাকে পল্টন থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে সেখান থেকে কবিরকে মামলার তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিজ্ঞাপন
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কবিরকে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে আদালতে হাজির করে ডিবি। মামলার রহস্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল জোনাল টিমের পরিদর্শক ফয়সাল আহম্মেদ। শুনানি নিয়ে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. কাইয়ুম হোসেন।
গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরে রিকশা করে যাওয়ার সময় তাকে খুব কাছ থেকে মাথায় গুলি করেন মোটরসাইকেলে যোগে আসা ছাত্রলীগের ক্যাডার ও একাধিক মামলার আসামি ফয়সাল করিম। এরপর দ্রুত তারা পালিয়ে যান।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ আগে হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে এবং অফিসের ভেতরে প্রবেশ করে কারও বের হওয়ার অপেক্ষা করতে দেখা যায় শ্যুটার ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির ওরফে দাতভাঙা কবিরকে।
জানা গেছে, রেকি করা ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আদাবর এলাকার নবোদয় হাউজিং, শ্যামলী হাউজিং দ্বিতীয় প্রকল্প ও বেড়িবাঁধ এলাকার ছিনতাইকারী ও কিশোর গ্যাং লিডার হিসেবে পরিচিত।
হাদির অফিস রেকি করার সময় কবিরের পরনে ছিল একটি ছাঁই কালার হুডি ও সাদা কালারের প্যান্ট এবং পায়ে চামড়ার জুতা। তিনি লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে একবার সিসিটিভি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে দ্রুত অফিসে প্রবেশ করেন। যেখানে তার চেহারা পুরোপুরি বোঝা যায়।
হাদিকে গুলি করার আগে সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী ও ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুলের (যিনি মুখে চশমা,কালো হুডি ও পরনে জিন্স প্যান্ট পড়া ছিলেন) সঙ্গে দ্রুত অফিস থেকে বের হয়ে যেতে দেখা যায় কবিরকে।
এদিকে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে একটি অপারেশনের পর নেওয়া হয় এভারকেয়ার হাসপাতালে। সেখানে দুদিন রাখার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরে।
হাদি বর্তমানে সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন বলে জানা গেছে। এই জুলাই বিপ্লবীর জন্য দোয়া করছেন দেশের লাখ লাখ মানুষ। সবার একটাই চাওয়া, সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক হাদি।
এএইচ
