দেশের ঊনবিংশতম প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক গত ২৪ জুলাই গ্রেফতার হয়েছেন। হত্যা-দুর্নীতিসহ তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। দেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম কোনো সাবেক প্রধান বিচারপতি যিনি গ্রেফতার হয়েছেন। নানা কর্মকাণ্ডে সমালোচিত সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে দেশের ‘গণতন্ত্র ধ্বংসের মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করেন অনেকেই।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের মাধ্যমে তিনি দেশে ফ্যাসিবাদের উত্থানের সুযোগ করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এটা ছাড়াও নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিচার বিভাগ ধ্বংসের জন্য খায়রুল হককে দায়ী করে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তবে বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, সাবেক এই প্রধান বিচারপতি সবচেয়ে বেশি সেবা দিয়েছেন যে দলটিকে সেই আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরাও তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছেন।
বিজ্ঞাপন
খায়রুল হক গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তার নানা অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ, ভোটাধিকার হরণ, দেশে অরাজকতা, রাজনৈতিক সংঘাত সৃষ্টি, সর্বোপরি গণতন্ত্র ধ্বংসের অন্যতম হোতা হিসেবে অনেকে তাকে চিহ্নিত করছেন। তারা বলছেন, বিচারালয়ের সর্বোচ্চ আসনে বসে বিচারের নামে তিনি করেছেন অবিচার। তার মুখ্য উদ্দেশ্যই ছিল রাজনৈতিক ইস্যুকে আদালতে টেনে এনে গণঅভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। সেই চেষ্টার সর্বশেষ নজির ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা।
খায়রুল হকের এমন কার্যকলাপের বিচার শুধু বিএনপি-জামায়াতপন্থীরাই নয়, আওয়ামী লীগপন্থীরাও চাচ্ছেন। তাদের মতে, যে সরকারব্যবস্থায় দেশে অনুষ্ঠিত তিনটি নির্বাচন অপেক্ষাকৃত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বলে মানুষের আস্থায় পরিণত হয়েছিল, সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আইনের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে বাতিল করে দেন বিচারপতি খায়রুল হক। এর মধ্য দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে পরপর তিনটি ভোটারবিহীন নির্বাচনের সুযোগ করে দিয়েছেন। এই সুবাধে আওয়ামী লীগ টানা সাড়ে ১৬ বছর ক্ষমতার আসনে চেপে বসেছিল। যার ফলে দেশের প্রাচীন ও অন্যতম বৃহত্তর রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট তকমা পেয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছে।
গত ২৪ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। দেশের ঊনবিংশতম প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগে গত ২৭ আগস্ট তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। এর আগে ২৫ আগস্ট খায়রুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় মামলা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী ভূঁইয়া। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা আছে। যে মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
বিচার চান আওয়ামী লীগপন্থীরাও
আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যালেন থেকে সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে সভাপতি পদে একাধিকবার মনোয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী একেএম ফয়েজ। তিনি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রয়াত আহ্বায়ক আব্দুল বাছেত মজুমদারের শ্যালক। আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ আইন সমিতির সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘১৯৮১ সালে আমি যখন হাইকোর্টে যোগদান করি, তখন থেকেই সাবেক প্রধান বিচারপতি এ.বি.এম খায়রুল হককে চিনি।
বর্তমানে আমি যে রুমে আছি, তিনি দীর্ঘদিন যাবত এই রুমেই ছিলেন এবং আমি সন্দেহাতীতভাবে মনে করি, তিনিই একজন প্রথম ব্যক্তি যিনি বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এবং গণতন্ত্র ধ্বংসকারী, লোভী প্রকৃতির লোক। তিনি বিচার বিভাগের কলঙ্ক। তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’
খায়রুল হকের বিচার দাবি করেছেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলএলএম ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডুলা) সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ আলী আহমেদ খোকন। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও আওয়ামীপন্থী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত।
গত ২৪ জুলাই আলী আহমেদ খোকন এক ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘অবশেষে একটি সুসংবাদ এলো। দেশ ও আওয়ামী লীগ ধ্বংসকারী বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেফতার। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
জানতে চাইলে খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি খায়রুল হকের বিচার চাই। তার জন্যই আওয়ামী লীগের এই দুর্দশা। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন এই খায়রুল হক।’
নতুন কোনো খায়রুল হক দেখতে চায় না আইনাঙ্গন
খায়রুল হকের গ্রেফতারের পর আইনজ্ঞরা বলছেন, বিচারকের আসনে বসে তিনি যেসব অপকর্ম করেছেন তা অমার্জনীয় অপরাধ। দেশ ও জাতিকে তিনি কলঙ্কিত করেছেন। তাকে তার কর্মের ফল ভোগ করতে হবে। তার বিচারের মাধ্যমে এমন নজির সৃষ্টি হওয়া প্রয়োজন যাতে করে ভবিষতে বিচার বিভাগে আর নতুন কোনো খায়রুল হকের জন্ম না হয়।
শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলই নয়, বিচারকের আসনে বসে তিনি খারিজ করে দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদনও। তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হলেও তাও প্রকাশ্য আদালতে বিএনপির আইনজীবীদের উত্থাপন করতে দেননি খায়রুল হক। ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে তার ঢাকা সেনানিবাসের বাড়ি হারাতে হয়। স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে তার দেওয়া রায় বিচার বিভাগকে দলীয়করণে রূপ দেওয়া হয়, তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগও রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
আইনজ্ঞরা বলছেন, খায়রুল হকের লক্ষ্যই ছিল বিচারকের আসনে বসে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। খালেদা জিয়াকে তার বাড়ি থেকে উৎখাতের মতো রায় দিয়ে বিচারিক অসাধুতার নজির স্থাপন করেছিলেন তিনি।
২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করলেও সংক্ষিপ্ত আদেশে বলা হয়েছিল পরবর্তী দুটি সংসদ নির্বাচন এ সরকারের অধীনে হবে। কিন্তু অবসরে গিয়ে লেখা পূর্ণাঙ্গ রায়ে এই অংশটুকু বাদ দেন তৎকালীন সদ্য অবসর নেওয়ার বিচারপতি খায়রুল হক। বিচার বিভাগের ইতিহাসে এর চেয়ে বড় জালিয়াতি আর কখনো হয়নি বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা।
খায়রুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান আইনজীবীরা
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের কারণে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ বছরের পর বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত, ভোট দিতে পারেনি। তার কর্মকালীন বিচারিক জীবনে এবং পরবর্তী সময়ে পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশে বিতর্ক ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তার বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত, রায় ও পদক্ষেপ বাংলাদেশের গণতন্ত্র, বিচার বিভাগরে স্বাধীনতা, রাষ্ট্রীয় কাঠামোর জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে। তিনিই তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা বাতিল করে দেশে সংঘাতের সৃষ্টি করেছিলেন।’
আরও পড়ুন-
২০১০ সালের ২৯ নভেম্বর ঢাকা সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়া নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল আবেদন (লিভ টু আপিল) খারিজ করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বেঞ্চ। এর ফলে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজরিত বাড়ি থেকে খালেদা জিয়াকে বের হতে হয়।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে শহীদ জিয়ার স্মৃতি বিজরিত ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে এক কাপড়ে বের করে দিয়েছিলেন খায়রুল হক। বিচারিক অসাধুতার নগণ্য নজির তিনি স্থাপন করেছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিনিময়ে বিচারপতি খায়রুল হক আইন কমিশনের চেয়ারম্যান পদ বাগিয়ে নিয়েছিলেন। খায়রুল হকের এমন বিচার করতে হবে যেন তাকে দেখে অন্য বিচারপতিরা সাবধান হয়ে যান।’
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আসার পর পর ২০০৯ সালের ২১ জুন স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে হিসেবে জিয়াউর রহমান নন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষক বলে হাইকোর্ট রায় প্রদান করেন। হাইকোর্টের ওই বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতি ছিলেন এবিএম খায়রুল হক। মুক্তিযোদ্ধা ডা. এম এ সালামের দায়ের করা এক জনস্বার্থ রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় দিয়েছিলেন তিনি।
ওই রায়ে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক উপস্থাপন করে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, দলিলপত্র’-এর তৃতীয় খণ্ড বাতিল ঘোষণা করা হয়। এই খণ্ডটি দেশ-বিদেশের সব স্থান থেকে বাজেয়াপ্ত ও প্রত্যাহারেরও নির্দেশ দেন খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের বেঞ্চ।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী বিচারকরা যে শপথ নেন তাতে বলা আছে, কোনো রকমের অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না। আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। কিন্তু আপনারা দেখেতে পাবেন এই বিচারপতি খায়রুল হক অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে।’
জামায়াতের এই আইনজীবী বলেন, ‘আসলে অভিযোগটা কী? একটা আদেশ যা ওপেন কোর্টে ঘোষণা করা হয় তা পূর্ণাঙ্গ আদেশে পরিবর্তন করে ফেলেছেন। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে জুডিসিয়াল ফ্রড করা হয়েছে। এ ধরনের ফ্রড আমরা আর কোনোভাবে বিচার বিভাগে দেখতে চাই না। যত বড় বিচারকই বিচার করুন না কেন এটা বিচারিক অপরাধ।’
তত্ত্বাবধায় বাতিলসংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায়ের মাধ্যমে বিচারপতি খায়রুল হক এদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম। তিনি বলেন, ‘সেখানে শুধু একটি বিশেষ দলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য তিনি আইনের অপপ্রয়োগ করে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছিলেন। এর ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে বহু বছর সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এর প্রধান কারিগর ছিলেন খায়রুল হক।’
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র হত্যা এবং শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট বানানোর মেইন আর্কিটেক্ট হলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। তার এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত যাতে ভবিষ্যতে নতুন কোনো খায়রুল হকের বিচারাঙ্গনে জন্ম না হয়।’
খায়রুল হকের বিচার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, ‘তিনি বিচারের নামে অবিচার করে গেছেন। তার নিজস্ব দলের প্রতি যে আনুগত্য ছিল প্রত্যেকবার তিনি চরিতার্থ করেছেন, তার আচরণে, তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজে, তার রায়ে পরিষ্কারভাবে প্রকাশিত হয়েছে। যা একজন বিচারপতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রতিবন্ধকতা হওয়া উচিত।’
এই আইনজীবী বলেন, ‘তার সবচেয়ে বড় অন্যায় ছিল, একটি বিশেষ দল, দলের কর্মী-সমর্থকদের প্রতি তার অসাধারণ আনুগত্য ছিল, এটা বিচারকার্যে প্রকাশ ঘটেছে। সুতরাং বিচারকের যে বিচক্ষণতা, যে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ তা তার ছিল না। এটা অবধারিত ছিল যে, আজ হোক কাল হোক এই পৃথিবীতে তার বিচার হবে। সুতরাং তাকে বিচারের সম্মুখীন হতে হচ্ছে, এটাই স্বাভাবিক।’
এআইএম/জেবি

