শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

খায়রুল হকের এক রায়েই ভেঙে পড়ে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৪ এএম

শেয়ার করুন:

খায়রুল হকের এক রায়েই ভেঙে পড়ে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের বৃহস্পতিবারের সকাল ছিল একেবারেই অস্বাভাবিক। হঠাৎ করেই তার বাসায় উপস্থিত হয় মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এরপর তাকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এটি ছিল দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো, যেখানে একজন প্রধান বিচারপতির হাতে পড়ল হাতকড়া।

খায়রুল হক ছিলেন অত্যন্ত ভদ্র ভাষী এবং স্মার্ট চলাফেরায় একজন বিচারক। তিনি দেশের বিচার বিভাগের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু তার একটি ঐতিহাসিক রায়ের কারণে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার ভিত কাঁপতে শুরু করে। সেই রায়টি ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে, যা পরবর্তীতে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে দেয়।


বিজ্ঞাপন


বিশ্লেষকদের মতে, ২০০৭ সালের এক রায়ের মাধ্যমে খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা কমিয়ে দেন। এতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধানে থাকা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। এর ফলস্বরূপ, নির্বাচনে সহিংসতা এবং অস্থিরতার সূচনা হয়। বিশেষত ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলগুলো অংশ না নেওয়ার কারণে নির্বাচন হয়ে ওঠে বিতর্কিত। সেই নির্বাচন চলাকালে বড় ধরনের সহিংসতা ঘটে এবং বহু মানুষের প্রাণহানি হয়।

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগও। তিনি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগে বারবার আলোচনায় এসেছেন। এছাড়া, প্লট নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালেও তিনি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে তার প্রকাশ্য বিরোধ ছিল এবং একসময় তিনি আনিসুল হককে পাশ কাটিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে নিজের পদে মেয়াদ বাড়িয়ে নেন।

প্রয়াত নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার তার বই ‘নির্বাচননামা: নির্বাচন কমিশনে আমার দিনগুলো’তে লিখেছেন, ‘দেশের অস্থিতিশীল রাজনীতির স্থপতি ছিলেন একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক।’ তার মতে, খায়রুল হক পর্দার অন্তরাল থেকে দলীয় রাজনীতির পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন ধরনের চালে অংশ নিয়েছিলেন।


বিজ্ঞাপন


এইউ 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর