শিক্ষা শেষ করে একজন তরুণ যখন কর্মজীবনে প্রবেশ করতে চায়, তখন তার প্রথম চ্যালেঞ্জটি হয় একটি উপযুক্ত চাকরি পাওয়া। কিন্তু বাংলাদেশের চাকরির বাজারে বহু শিক্ষিত তরুণ-তরুণী ফ্রেশার হিসেবে প্রতিনিয়ত প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়ছেন। কেবল অভিজ্ঞতার অভাব নয়, নানা কাঠামোগত সমস্যার কারণে তারা যোগ্য হয়েও উপযুক্ত স্থানে চাকরি পাচ্ছেন না।
ফ্রেশারদের কেন চাকরি দিতে চায় না নিয়োগদাতা কোম্পানি?
১. অভিজ্ঞতার চাহিদা:
বেশিরভাগ চাকরির বিজ্ঞাপনেই দেখা যায়, ‘কমপক্ষে ১–৩ বছরের অভিজ্ঞতা’ চাওয়া হচ্ছে। ফলে সদ্য পাস করা ফ্রেশাররা এই যোগ্যতার ঘাটতিতে বাদ পড়ছেন।
২. কর্মদক্ষতার ঘাটতি:
শুধু একাডেমিক ডিগ্রি থাকলেই চলবে না— নতুন প্রযুক্তি, সফট স্কিল, প্রেজেন্টেশন, যোগাযোগ দক্ষতা, ইংরেজি ভাষায় পারদর্শিতা ইত্যাদির অভাব ফ্রেশারদের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে ফেলে।
বিজ্ঞাপন

৩. ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার ব্যবধান:
বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্জিত জ্ঞান অনেক সময় বাস্তব কর্মক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ফলে চাকরির বাজারের চাহিদা পূরণে ফ্রেশাররা প্রস্তুত নন।
৪. ইন্টারভিউ ও সিভি তৈরির দুর্বলতা:
ফ্রেশারদের অনেকেই পেশাগত সিভি তৈরি ও ইন্টারভিউয়ের কৌশল জানেন না। সঠিকভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে না পারায় তারা মূল্যবান সুযোগ হারান।

বয়স ও পরিবারের চাপ:
চাকরির জন্য অপেক্ষা করার সময় তাদের ওপর পরিবার, সমাজ এবং আত্মীয়স্বজনদের চাপ বাড়ে, যা মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলে এবং আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলে।
সম্ভাব্য সমাধান:
- বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ‘ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং’ এবং স্কিল-ভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা
- ফ্রেশারদের জন্য ইন্টার্নশিপ ও ট্রেইনি প্রোগ্রাম চালু করা
- নিয়োগদাতাদের উচিত, ফ্রেশারদের জন্য আলাদা সুযোগ সৃষ্টি করা
আরও পড়ুন: কোন পেশায় টাকা বেশি?
- শিক্ষার্থীদের উচিত, পড়াশোনার পাশাপাশি সফট স্কিল ও প্র্যাকটিক্যাল দক্ষতা অর্জনে মনোযোগী হওয়া
- সিভি লেখার ও ইন্টারভিউ দেওয়ার উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা
দেশের তরুণ সমাজের বিরাট অংশই এখন ফ্রেশার—যারা আগামীর নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। তবে প্রথম ধাপেই যদি তারা চাকরির সুযোগ না পান, তবে সেই সম্ভাবনা ক্ষয়ে যায়। তাই রাষ্ট্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করে ফ্রেশারদের জন্য একটি সহানুভূতিশীল ও সুযোগবান্ধব চাকরির পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
এজেড

