ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যায় চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই এর অপর অংশ অবরুদ্ধ পশ্চিম তীরে অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের জন্য নতুন করে আরও ৭৬৪টি বাড়ি তৈরির একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে দখলদার ইসরায়েলের সরকার।
মঙ্গলবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল সেভেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এ তথ্য। খবর আনাদোলুর।
বিজ্ঞাপন
চ্যানেল সেভেনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) ইসরায়েলের সরকার ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের জন্য পশ্চিম তীরের রাজধানী রামাল্লার হাশমোনাইম এলাকায় ৪৭৮টি, বেইতার ইল্লিত এলাকায় ২৩০টি এবং গিভা’ত জে’এভ এলাকায় ৫৬টি- সর্বমোট ৭৬৪টি নতুন বাড়ি তৈরির অনুমোদন দিয়েছে।
ইসরায়েলের সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ ইস্যুতে কোনো দাপ্তরিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক আইন ও জনমত সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে গত কয়েক দশক ধরে ধীরে ধীরে পশ্চিম তীরে নিজেদের দখলকৃত এলাকা বাড়াচ্ছে ইসরায়েলের সরকার।
বিজ্ঞাপন
২০২২ সালে দেশটির যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বধীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এই অপতৎপরতা বেড়েছে কয়েক গুণ।
ইসরায়েয়েলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর গত ৩ বছরে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের জন্য পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় মোট ৫১ হাজার ৩৭০টি নতুন বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমতীরে অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নাগরিকদের একাংশও সরব। ‘পিস নাও’ নামে তাদের একটি সংস্থা আছে। এই সংস্থার তথ্য অনুযায়ী— প্রস্তাবিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী পূর্ব জেরুজালেমে বর্তমানে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার এবং পশ্চিম তীরে ৪ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ইহুদি বসতি স্থাপনকারী (সেটলার) বসবাস করছে।
জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুসারে মধ্যপ্রাচ্যের আল-আকসা অঞ্চলে ‘ইসরায়েল’ ও ‘ফিলিস্তিন’ নামের দু’টি পৃথক রাষ্ট্র হওয়ার কথা। কিন্তু প্রায় প্রতি বছর ইসরায়েল পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের সংখ্যা বাড়াতে থাকায় প্রস্তাবিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভূখণ্ড কমছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ ইস্যুতে বহুবার ইসরায়েলকে আপত্তি জানানো হয়েছে, কিন্তু ইসরায়েলের সরকার এসবে কর্ণপাত করছে না।
গত বছর জুলাই মাসে জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস এক রায়ে পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম এলাকায় নতুন বাড়িঘর নির্মাণ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের অবৈধ বলে ঘোষণা করেছিলেন।
ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের সরিয়ে নিতে ইসরায়েলের সরকারকে নির্দেশও দিয়েছিলেন আদালত। আদালতের নির্দেশের পরেও এখন পর্যন্ত এ ব্যাপরে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ইসরায়েলের সরকার।
-এমএমএস

