বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

পাঞ্জাব বিধানসভায় ইমরান খান ও তার দলকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব পাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

পাঞ্জাব বিধানসভায় ইমরান খান ও তার দলকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব পাস

‘রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে পাকিস্তানের কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) নিষিদ্ধ করার দাবিতে দেশটির পাঞ্জাবের প্রাদেশিক বিধানসভায় একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দেশটির ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল-এন)–এর তাহির পারভেজের উত্থাপিত এই প্রস্তাবটি পিটিআই সদস্যদের বয়কটের মধ্যে গৃহীত হয়।


বিজ্ঞাপন


সম্প্রতি পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নাম উল্লেখ না করে ইমরান খানকে সেনাবাহিনীবিরোধী বক্তব্য এবং উসকানিমূলক মনোভাব ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনে তীব্র সমালোচনা করার কয়েকদিন পর এই ঘটনা ঘটল।

আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘এ ধরনের বক্তব্য এখন আর রাজনীতির পরিধির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই; বরং এগুলো “জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি”তে পরিণত হয়েছে।’

এরপর থেকে এ নিয়ে পিএমএল-এন এবং পিটিআইয়ের নেতাদের মধ্যে বাকযুদ্ধ অব্যাহত ছিল।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ইমরান খান অতীতে কঠিন ভাষায় বিরোধী রাজনীতিকদের সমালোচনা করেছেন। তাই সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের মন্তব্য নিয়ে আপত্তি তোলার কোনো অধিকার তার নেই।


বিজ্ঞাপন


অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আইএসপিআর মহাপরিচালকের মন্তব্যকে পিটিআই ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করে কঠোরভাবে নিন্দা জানিয়েছে এবং জোর দিয়ে বলেছে, ‘ইমরান খান জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি নন’।

এদিকে মঙ্গলবার পাঞ্জাবের বিধানসভায় পিএমএল-এন আইনপ্রণেতা তাহির পারভেজ পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ও তার দলকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবটি উত্থাপন করলেও পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা এদিন পরিষদে উপস্থিত ছিলেন না। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাত নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে তারা অধিবেশন বর্জন করেন। তবে ক্ষমতাসীন দলের আইন প্রণেতাদের সকলে এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। 

প্রস্তাবে বলা হয়, ‘সেনাবাহিনীর মতো প্রতিষ্ঠান প্রতিটি ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে রক্ষা করেছে এবং ভারতের মতো পাঁচ গুণ বড় শত্রুকে সফলভাবে মোকাবিলা করেছে। তারা দেশের অখণ্ডতা ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ তবে প্রস্তাবে পিটিআই বা ইমরানের নাম নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

এতে বলা হয়, ‘শত্রুরাষ্ট্রের হাতিয়ার হয়ে কাজ করার কারণে ওই রাজনৈতিক দল (পিটিআই) এবং এর প্রতিষ্ঠাতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। তার (ইমরান খান) বিরুদ্ধে দেশবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার এবং বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।’

আরও পড়ুন

‘ইমরান খান সুস্থ থাকলেও মানসিক নির্যাতনের শিকার’, জানালেন বোন উজমা 

ইমরান খানের সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ! 

প্রস্তাবে আরও দাবি করা হয়েছে, রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক গোষ্ঠীর যেকোনো নেতার বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং তাদের ‘যথাযথ শাস্তি’ দেওয়া হোক।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের শুরুর দিকে পাকিস্তানের তৎকালীন ফেডারেল সরকার পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ইমরান খান, সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি এবং জাতীয় পরিষদের (এনএ) সাবেক ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির বিরুদ্ধে ধারা ৬ এর অধীনে মামলা দায়েরের আবেদন করে।

মূলত পিটিআইকে এনএ-তে একক বৃহত্তম দল হতে বাধা দেওয়ার জন্য এই পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। তবে পরবর্তীতে ওই নিষেধাজ্ঞা অনুসরণ করেনি শেহবাজ শরীফের সরকার। যদিও রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা পাকিস্তানে নতুন কোনও প্রথা নয়। কয়েক দশক ধরে এই প্রথা অনুসরণ করে আসছে দেশটির বিগত সামরিক ও গণতান্ত্রিক সরকারগুলো।

সূত্র: ডন


এমএইচআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর