শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘ভারতের সঙ্গে শান্তি চান ইমরান খান, যুদ্ধের জন্য ব্যাকুল আসিম মুনির’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম

শেয়ার করুন:

'ভারতের সঙ্গে শান্তি চান ইমরান খান, যুদ্ধের জন্য ব্যাকুল আসিম মুনির’

পাকিস্তানের কারারন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বোন আলিমা খান অভিযোগ করেছেন, ‘ক্ষমতায় থাকালীন ইমরান খান ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন, যা তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ উগ্র ইসলামপন্থী পাকিস্তানের বর্তমান প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্সাল আসিম মুনির ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য ব্যাকুল হয়ে আছেন।’ 

মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের ‘দ্য ওয়ার্ল্ড উইথ ইয়ালদা হাকিম’ অনুষ্ঠানে এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন আলিমা থান। 


বিজ্ঞাপন


সাক্ষাতকারে ইমরান খানকে একজন ‘খাঁটি উদারপন্থী’ বলে অভিহিত করে তিনি দাবি করেন, ইমরান ধারাবাহিকভাবে ভারতের সঙ্গে আরও ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। তবে সেনাপ্রধান মুনিরের ‘ইসলামী মৌলবাদ এবং রক্ষণশীলতা’ ভারতের প্রতি তার এই মনোভাবের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এবং এই কারণেই সে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য ব্যাকুল। 

আলিমা আরও বলেন, “ইমরান খান যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন তিনি ভারতের সঙ্গে, এমনকি বিজেপির সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনের জন্য কাজ করেছেন, কিন্তু যতক্ষণ এই ‘উগ্র ইসলামপন্থী’ (আসিম মুনির) ক্ষমতায় থাকবে, তখন শুধু ভারতের সঙ্গেই নয়, ভারতের মিত্রদের সঙ্গেও সংঘাত দেখা দেবে।’

image
‘দ্য ওয়ার্ল্ড উইথ ইয়ালদা হাকিম’ অনুষ্ঠানে আলিমা থান। 

পশ্চিমা দেশগুলোকে ইমরান খানের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে আলেমা যুক্তি দিয়েছিলেন, বর্তমান সরকার ‘পাকিস্তানের জনগণকে দমন করার জন্য’ পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখছে।

ইমরান খান দেশের ৯০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করেন বলে দাবি করে আলিমা প্রশ্ন রাখেন, ‘দেশের ৯০ শতাংশ প্রতিনিধিত্বকারী একজন ব্যক্তিকে আপনি কীভাবে জেলে পাঠাতে পারেন? তারা মূলত পাকিস্তানের জনগণকে দমন করতে চায়। ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা বিশ্বাস করতেন যদি তারা ইমরান খানকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে তাহলে মানুষ তাকে ভুলে যাবে।’

প্রসঙ্গত, একাধিক মামলায় অভিযুক্ত পিটিআইয়ের প্রধান ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তার সঙ্গে সাক্ষাতে অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটির সরকার। এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার মৃত্যুর ভুয়া খবরও ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। এই বিক্ষোভ ঠেকাতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

চাপের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ইমরান খানের বোন উজমা খানুমকে তার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিয়েছে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারের কর্তৃপক্ষ।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকালে উজমা তার ভাই ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে আদিয়াল কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করেন। এসময় তার সঙ্গে আসা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অন্য দুই বোন আলেমা খান এবং নওরীন নিয়াজি এবং পিটিআই-এর নেতাকর্মীরা কারাগারের বাইরে অপেক্ষা করেন। 

সাক্ষাতের পর কারাগারের বাইরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে উজমা বলেন, ‘ইমরান খানের স্বাস্থ্য পুরোপুরি ভালো। তবে তিনি খুব ক্ষুব্ধ এবং তাকে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।’

তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সারাদিন ধরে তার ছোট সেলে আটকে রাখা হচ্ছে, বাইরে যাওয়ার সময় খুবই কম, এমনকি কারাগারের অন্যান্য কয়েদিদের সঙ্গেও কোনও কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। 

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি এবং তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা— আইএসআইয়ের তৎকালীন প্রধান আসিম মুনির। এই পদক্ষেপে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান অসন্তুষ্ট হয়ে নিয়োগের মাত্র আট মাসের মাথায় মুনিরকে তার পদ থেকে অপসারণ করেছিলেন। এরপর থেকেই দুইজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। 

সূত্র: স্কাই নিউজ, টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া

এমএইচআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর