রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

চারবার ফোন করেছেন ট্রাম্প, ধরেননি মোদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১০:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

trump modi

গত কয়েক সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কমপক্ষে চারবার ফোন করেছিলেন। তবে মোদি একবারও ট্রাম্পের ফোন ধরেননি বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে জার্মান সংবাদমাধ্যম ফ্রাঙ্কফ্রুটার অলজেমাইন (এফএজেড)।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।  


বিজ্ঞাপন


মেইঞ্জ-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এফএজেড বলেছে, ‘ট্রাম্পের আচরণে ক্ষুব্ধ হওয়ায় ফোন ধরেননি মোদি, পাশাপাশি সতর্কতার অংশ হিসেবেও তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের ফোন এড়িয়ে যেতে পারেন।’

প্রতিবেদনে ফোন কলগুলো কখন করা হয়েছিল তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তবে ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ পর টানাপোড়নের মধ্যেই ট্রাম্প মোদির সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন বলে জানায় সংবাদপত্রটি।   

বার্লিনভিত্তিক গ্লোবাল পাবলিক পলিসি ইনস্টিটিউটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক থোরস্টেন বেনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে একটি পোস্টে ওই প্রতিবেদনে একটি ছবি পোস্টে যুক্ত করে লিখেছেন, ‘পত্রিকাটি দাবি করেছে ট্রাম্প সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মোদিকে চারবার ফোন করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মোদি সেগুলো প্রত্যাখ্যান করেছেন।’

32


বিজ্ঞাপন


ট্রাম্প গত ৩১ ভারতের অর্থনীতিকে মৃত বলে অভিহিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারত ও রাশিয়াকে আক্রমণ করে তিনি বলেছেন, ‘ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী করছে, তা নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই। চাইলে তারা তাদের মৃত অর্থনীতি একসঙ্গে ডুবিয়ে দিতে পারে।’ 

আরও পড়ুন

ট্রাম্পের উচ্চ শুল্কে দিশেহারা ভারতীয় ব্যবসায়ীরা

ভারত-রাশিয়া তাদের মৃত অর্থনীতি ডোবালে, আমার কিছু আসে যায় না: ট্রাম্প

ভারতের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র 

এরপর ১০ আগস্ট মোদি তার এক বক্তব্যে বলেন, ভারতের অর্থনীতি হলো সমৃদ্ধ। যেটি বিশ্বের তৃতীয় অর্থনীতিতে পরিণত হবে।

জার্মান পত্রিকাটি বলেছে, ট্রাম্পের ‘মৃত অর্থনীতি’ মন্তব্যে অপমানিত হয়েছেন মোদি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প সাধারণত অন্য দেশগুলোর মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরতাকে কাজে লাগিয়ে সুবিধা আদায় করেন। কিন্তু মোদি তার প্রথম মেয়াদে ভারতের অর্থনৈতিক স্বার্থে কোনো আপস না করে ট্রাম্পের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রেখে ‘এর প্রতিরোধ’ করেছিলেন।

ট্রাম্প বারবার কথা বলতে চাইলেও মোদি সেটি প্রত্যাখ্যান করায় ‘ট্রাম্পের ওপর মোদির ক্ষোভের গভীরতা প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়া সতর্কতাও ফুটে উঠেছে।’— যোগ করে পত্রিকাটি।

সম্প্রতি ভিয়েতনামের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা করেন। যা দেশটির নেতার তো লামের সঙ্গে একটি ফোনকলের পর তড়িঘড়ি করে আয়োজন করা হয়, যা দুই দেশের প্রতিনিধিদল অনেক কষ্ট করে সাজিয়েছিল। পরবর্তীতে ট্রাম্প সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট দেন, ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো চুক্তি হয়নি। 

ভিয়েতনামের নেতার মতো ট্রাম্পের এই ফাঁদে পড়তে চান না মোদি— এটির সতর্কতার অংশ হিসেবে তিনি ফোন ধরেননি বলেও ধারণা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

পত্রিকাটি আরও বলেছে, ট্রাম্প বলেছেন, পাকিস্তানে তারা তেলক্ষেত্র বানাবেন। যেখান থেকে ভারত তেল কিনবে। তার এ মন্তব্য ভারত ভালোভাবে নেয়নি। এছাড়া হোয়াইট হাউজে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনীরকে নৈশভোজের আমন্ত্রণকেও উস্কানি হিসেবে দেখেছে ভারত। সঙ্গে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব একাই বন্ধ করার যে দাবি ট্রাম্প করেন সেটিতেও নয়াদিল্লি নাখোশ।

এফএজেড আরও উল্লেখ করেছে, ভারতে ট্রাম্প পরিবারের মালিকানাধীন নির্মাণ প্রকল্পগুলোও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কোম্পানিটি দিল্লির কাছে ট্রাম্পের নামে বিলাসবহুল টাওয়ার তৈরি করেছিল। গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ১২ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের ৩০০টি অ্যাপার্টমেন্ট একদিনেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘাতে ট্রাম্প যখন দাবি করলেন যে তিনি একাই যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছেন, তখন ভারতীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।


এমএইচআর

 

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর