৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময়ের প্রস্তাব দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এ প্রস্তাব ইসরায়েল গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে দেশটির দুজন কর্মকর্তা।
তবে ইসরায়েলের অবস্থান স্পষ্ট—যুদ্ধ শেষ হবে কেবল তখনই, যখন গাজায় থাকা ৫০ জন জিম্মির (যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত) সবাইকে মুক্তি দেওয়া হবে। খবর রয়টার্সের।
বিজ্ঞাপন
হামাসের প্রস্তাব অনুযায়ী, ১০ জন জীবিত ও ১৮ জন মৃত জিম্মির বিনিময়ে ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দির (এর মধ্যে নারী ও অপ্রাপ্তবয়স্কও থাকবে) মুক্তি দিতে হবে।
এছাড়া ফিলিস্তিনিদের মানবিক দিক বিবেচনায় গাজা থেকে আংশিক সেনা প্রত্যাহার ও আরও বেশি ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের সুযোগ পাবে। তবে ইসরায়েল বর্তমানে গাজার ৭৫% এলাকা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
মূলত, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় এবং যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আলোচনার অংশ হিসেবে এই প্রস্তাব এসেছে। ইসরায়েলের দাবি, সব ৫০ জিম্মির মুক্তি নিশ্চিত না হলে যুদ্ধ শেষ নয়।
বিজ্ঞাপন
প্রস্তাবের বিষয়ে হামাস কর্মকর্তা ইজ্জাত আল-রিশক জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত এই যুদ্ধবিরতি একটি অন্তর্বর্তী চুক্তি, যা ভবিষ্যতে যুদ্ধ শেষ করার আলোচনার পথ খুলবে।
আলোচনার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, এবার হামাস কোনো অতিরিক্ত শর্ত ছাড়াই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে।
আরও পড়ুন:
এদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাতে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে গাজা সিটি দখলের চার ধাপের পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়:
১. দক্ষিণ গাজায় মানবিক অবকাঠামো তৈরি,
২. গাজা সিটি থেকে জনগণকে সরিয়ে নেওয়া,
৩. শহর ঘিরে ফেলা,
৪. স্থল অভিযান শুরু করা।
এমন প্রেক্ষাপটে এরই মধ্যে হাজারো ফিলিস্তিনি নতুন হামলার আশঙ্কায় পশ্চিম ও দক্ষিণে পালিয়ে গেছে। মঙ্গলবারই ইসরায়েলি গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলায় অন্তত ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন:
এদিকে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির দাবি জানাচ্ছে।সেই সঙ্গে জিম্মিদের পরিবারগুলো যুদ্ধবিরতি ও মুক্তির দাবিতে আন্দোলন জোরদার করেছে।
তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার কট্টর ইহুদিপন্থি জোটসঙ্গীদের চাপে রয়েছেন। এদের মধ্যে দুই মন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ও ইতামার বেন-গভির যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া ও গাজা দখলের পক্ষে।
আরও পড়ুন:
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, এখনো মূল মতপার্থক্য রয়েছে। ইসরায়েল চায় হামাস অস্ত্র সমর্পণ করে নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়ে গাজা ত্যাগ করুক—যা হামাস এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করছে।
দখলদার ইসরায়েল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ গাজায় অবিরত হামলা চালিয়ে এ পর্যন্ত ৬২,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।
সেই সঙ্গে টানা অবরোধের মুখে গাজায় তীব্র মানবিক বিপর্যয় চলছে। উপত্যাকাটির অধিকাংশ মানুষই এখন বাস্তুচ্যুত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
-এমএমএস

