শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫, ঢাকা

গাড়ি, ৮০০ গ্রাম সোনাতেও চাহিদা মেটেনি শ্বশুরবাড়ির! করুণ পরিণতি নববধূর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২৫, ০৬:০৭ পিএম

শেয়ার করুন:

বড় গাড়ি, ৮০০ গ্রাম সোনাতেও চাহিদা মেটেনি শশুরবাড়ির! করুন পরিণতি নববধূর

মেয়ের বিয়েতে যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ৭০ লাখ টাকার ভলভো গাড়ি, প্রায় এক কেজি সোনা। তারপরও চাহিদা মেটেনি পাত্র পক্ষের। শ্বশুরবাড়িতে যৌতুতের দাবিতে লাগাতার মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের জেরে বিয়ের ২ মাসের মধ্যেই আত্মহত্যা করেছেন নববধূ। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গেছে ভারতের দক্ষিণী রাজ্য তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুর এলাকায়।

পুলিশের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনের বলা হয়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ২৭ বছর বয়সি রিধন্যার সঙ্গে বিয়ে হয় কভিন কুমারের (২৮)। রিধন্যা তিরুপ্পুরের বিখ্যাত গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আন্নাদুরাইয়ের কন্যা। বিয়েতে বরপক্ষকে যৌতুক দিতে কোনো খামতি রাখেননি তিনি।  


বিজ্ঞাপন


বিয়েতে যৌতুকের পরিমাণ ছিল চোখ কপালে ওঠার মতো। বহু মূল্যবান সামগ্রীর পাশাপাশি কভিনকে যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয় ৭০ লাখ রুপির ভলভো গাড়ি এবং ৮০০ গ্রাম সোনা। কিন্তু তাতেও পাত্র পক্ষের মন ভরেনি। বিয়ের মাত্র ১০ দিনের মাথায় আরও যৌতুকের দাবিতে রিধন্যার ওপর নির্যাতন শুরু করে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। দিনে দিনে তা আরও খারাপ দিকে যায়।

এই পরিস্থিতিতে গতকাল রোববার মন্দিপালয়মে এক মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার নামে গাড়ি নিয়ে বের হন রিধন্যা। এরপর মন্দিপালায়মের পথে গাড়ি থামিয়ে সেখানেই কীটনাশক ট্যাবলেট খান তিনি। দীর্ঘক্ষণ ধরে সন্দেহজনকভাবে রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে গাড়ি থেকে উদ্ধার করে রিধন্যার নিথর দেহ। মুখে ফেনা দেখে আত্মহত্যার বিষয়টি অনুমান করে পুলিশ। 

এদিকে মৃত্যুর আগে রিধন্যা তার বাবাকে ৭টি অডিও মেসেজ পাঠান। সেখানেই যৌতুকের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির লোক ও স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কথা বলেছেন। এমনকী তার এই পদক্ষেপের জন্য ক্ষমাও চান বাবার কাছে। 


বিজ্ঞাপন


একটি অডিও মেসেজে রিধন্যা বলেন, ‘এই বিয়ে একটা চক্রান্ত। কাবিন ও তার পরিবার পরিকল্পনা করেই আমাকে বিয়ে করেছিল। প্রতিদিন সহ্য করতে হচ্ছে মানসিক নির্যাতন। কাউকে বলতেও পারি না। যারা শুনছেন, তাঁরা বলছেন বিবাহিত জীবনে এসব চলেই, অথচ কেউ বোঝেন না আমার যন্ত্রণা।'

রিধন্যার মরদেহ তিরুপ্পুর জেলা সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই হাসপাতালের বাইরে জড়ো হয়ে তার আত্মীয়স্বজনরা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান। ইতিমধ্যেই রিধন্যার স্বামী কাবিন কুমার, শ্বশুর ঈশ্বরমূর্তি ও শাশুড়ি চিত্রাদেবীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ‘ডাওরি প্রোহিবিশন অ্যাক্ট’-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

এমএইচআর

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর