সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

প্লাস্টিক সার্জারি করতে আবুধাবিতে যাওয়া শাহজাদীর ফাঁসি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ মার্চ ২০২৫, ০১:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

প্লাস্টিক সার্জারি করতে আবুধাবিতে যাওয়া শাহজাদীর ফাঁসি

ভারতের উত্তর প্রদেশের বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলের বাসিন্দা শাহজাদীর মুখে শৈশব থেকেই পোড়া দাগ ছিল। তার ভাই শমসের জানান, সেই দাগগুলো তাকে সবসময় মানসিক পীড়া দিতো। তিনি চাইতেন তার মুখের দাগ গুলো মুছে যাক।

আগ্রার উজাইর নামে এক ব্যক্তি যখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্লাস্টিক সার্জারির জন্য সহায়তার প্রস্তাব দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তখন তিনি তার জীবন পরিবর্তনের সুযোগ দেখতে পান।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চান না নেতানিয়াহু

২০২১ সালের ডিসেম্বরে, তিনি বৈধ ভিসায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে পৌঁছান। তবে, প্রতিশ্রুত অস্ত্রোপচারের পরিবর্তে, উজাইর তাকে তার আত্মীয় ফয়েজের বাড়িতে থাকতে পাঠান। সেখানে, তাকে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হয় - কোনো চিকিৎসা পাননি তিনি।

সেই শাহজাদীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি তার শেষ ফোন করেছিলেন পরিবারের সদস্যদের কাছে। বাড়ির কেউ বিস্তারিত জানত না। কীভাবে এটি ঘটেছিল, তার দেহাবশেষ কোথায় রাখা হবে- কিছুই জানতো না তার পরিবার।

২০২২ সালের আগস্টে ফয়েজের স্ত্রী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন এবং শাহজাদীকে শিশুটির যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। চার মাস পরে ৭ ডিসেম্বর শিশুটিকে নিয়মিত টিকা দেওয়া হয়। রাতে প্রচণ্ড জ্বরে শিশুটি মারা যায়।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন- ভারতের অনুরোধ উপেক্ষা করে আমিরাতে তরুণীর ফাঁসি

শোকে কাবু হয়ে ফয়েজের দুঃখ ক্রোধে পরিণত হয় এবং শাহজাদীর বিরুদ্ধে শিশুটিকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। ২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আবুধাবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং ৩১ জুলাই মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি আল ওয়াথবা কারাগারে বন্দি ছিলেন।

তার মৃত্যুদণ্ড ঠেকাতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বহু চেষ্টা-তদবির করেও ব্যর্থ হয়। আরব আমিরাত প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্তে অনঢ় থাকে। 

উত্তর প্রদেশের বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলের বান্দায় অবস্থিত গোয়েরা মুঘলি গ্রামের একটি সাধারণ বাড়িতে ১৫ ফেব্রুয়ারি ফোন বেজে উঠল। 

আরও পড়ুন: জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওপর রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা

একটি পরিচিত ভারী কণ্ঠস্বর নীরবতা ভেঙে দিল। অপর প্রান্ত থেকে ৩৩ বছর বয়সী শাহজাদী খান বলেন, এটিই আমার শেষ ফোন।

তার পরিবার হতবাক। তার ভাই শমসের ফোনে তার হাত শক্ত করে ধরলেন। শাহজাদী খান বললেন, তারা আমার শেষ ইচ্ছা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিল, আমি আম্মু এবং আব্বুর সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করেছিলাম।

চার মাস বয়সী এক শিশুকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আবুধাবিতে মৃত্যুদণ্ড হয় তার। শাহজাদীর শেষকৃত্য হবে ৫ মার্চ আবুধাবিতে।

-এমএমএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর