শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ঢাকা

ইরানের হামলা ঠেকাতে জর্ডান কেন এত তৎপর?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩১ পিএম

শেয়ার করুন:

ইরানের হামলা ঠেকাতে জর্ডান কেন এত তৎপর?
ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইরান। তবে দেশটির ছোড়া ড্রোনের বেশকিছু ভূপাতিত করেছে জর্ডান। দেশটির দাবি, তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করায় জনগণের নিরাপত্তার জন্য এগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে। এতে বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে দেশটির।

জর্ডানের মন্ত্রিসভার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত রাতে ইরান যখন ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে তখন তারা বেশকিছু ড্রোন ভূপাতিত করেছে। নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিজেদের আকাশসীমায় প্রবেশ করায় এগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে। খবর আল জাজিরার


বিজ্ঞাপন


বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইরানের ছোড়া কিছু শার্পনেল বিভিন্ন জায়গায় পড়েছে। তবে এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ ছাড়া হতাহতের কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: ইরানে কি পাল্টা হামলা চালাবে ইসরায়েল?

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদামাধ্যম জানিয়েছে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এমন সবকিছুর মোকাবিলা করবে যা মাতৃভূমি এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা বিপন্ন করবে। এ ছাড়া আকাশসীমা ও ভূখণ্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির সরকার সব পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, উত্তেজনা বৃদ্ধি বিপজ্জনক হবে।


বিজ্ঞাপন


রয়টার্সের খবরে বলা হয়, রাজধানী আম্মানের দক্ষিণপ্রান্ত থেকে বেশ কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত হতে দেখা গেছে। জেরুজালেম থেকে আম্মানের দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইরানের নিক্ষেপ করা এসব ড্রোন হামলা চালাতে জেরুজালেমের দিকে যাচ্ছিল এবং পথিমধ্যেই ড্রোনগুলোকে জর্ডান উপত্যকার জর্ডানিয়ান অংশে গুলি করে ভূপাতিত করে জর্ডানের যুদ্ধবিমান।

আরও পড়ুন: ইসরায়েল ৩ ছেলের প্রাণ নিয়েছে, তবু পিছু হটবো না: ইসমাইল হানিয়া

উল্লেখ্য, শনিবার রাতে অপারেশন ট্রু প্রোমিজ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে ইরান। এ প্রতিক্রিয়া সীমিত ও নির্ধারিত হবে বলে জানিয়েছেন ইরানের কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান কী করতে সক্ষম তার সামান্য চিত্র দেখাল মাত্র। এটা এমন একটি দৃশ্য যা কখনো কেউ দেখেনি।

এমন হামলার পরেই পাল্টা হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী, একই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিও সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে আইআরজিসির এক কমান্ডার জানান, ইসরায়েল যদি প্রতিক্রিয়া দেখায় তাহলে তার চেয়েও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাবে ইরান।

এদিকে ইসরায়েলের হামলার মধ্যেই জর্ডানে হামলার হুমকি দিয়েছে ইরান। ইসরায়েলকে সহযোগিতা করলে জর্ডান পরবর্তী হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে তারা।

তেহরান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের একটি সামরিক সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে, জর্ডান গুরুতর প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে পারে। ইহুদিবাদী দেশটির সঙ্গে জোটবদ্ধ হলে তারা পরবর্তী টার্গেট হতে পারে।

আরও পড়ুন: নেতানিয়াহুর গাজা নীতি ছিল ‘ভুল’: বাইডেন

ইরানের অভিযোগ, ইরানের হামলা প্রতিরোধে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। মুসলিম দেশ জর্ডানও ইরানের হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলকে সহায়তা করছে। জর্ডান ইসরায়েলের দিকে উড়ন্ত কয়েক ডজন ইরানি ড্রোনকে গুলি করে ভূপাতিত করে। ইরানের নিক্ষেপ করা এসব ড্রোন হামলা চালাতে জেরুজালেমের দিকে যাচ্ছিল এবং পথিমধ্যেই ড্রোনগুলোকে জর্ডান উপত্যকার জর্ডানিয়ান অংশে গুলি করে ভূপাতিত করে জর্ডানের যুদ্ধবিমান।

ইরানের ওই সামরিক সূত্রটি বলছে, জর্ডান যদি ভবিষ্যতে আবারও জড়িত হয় তাহলে দেশটি ইরানের সামরিক অভিযানের পরবর্তী লক্ষ্য হয়ে উঠতে পারে। 

তবে জর্ডান বলছে, তাদের ভূখণ্ডের নিরাপত্তার জন্যই তারা ইরানের ছোড়া রকেট ঠেকিয়ে দিয়েছে।

গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গত বছর শেষ দিয়ে জর্ডান যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাদের সীমান্তে সুরক্ষার জন্য প্যাট্রিয়ট আকাশ সুরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করার অনুরোধ করেছিল। ওই অঞ্চলে ওয়াশিংটনের বড় মিত্র জর্ডান। দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। যেগুলোতে কয়েকশ মার্কিন সেনা অবস্থান করে এবং বছরজুড়ে সামরিক মহড়া চালায়।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর