খারকিভ শহরের উপর রাশিয়ার বেড়ে চলা হামলার মুখে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পশ্চিমা জগতের 'উদাসীনতা' সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রাশিয়ার লাগাতার হামলার মুখে কোণঠাসা ইউক্রেন আত্মরক্ষার জন্য যথেষ্টঅস্ত্র ও গোলাবারুদের অভাবে অসহায় বোধ করছে। বিশেষ করে দেশের পূর্বে খারকিভ শহরের উপর রাশিয়ার আক্রমণ বেড়ে চলেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি নিজে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে সেখানে গেছেন।
বিজ্ঞাপন
জার্মানির বিল্ড ও অন্যান্য কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পশ্চিমা জগতের পক্ষ থেকে যথেষ্ট সামরিক সহায়তার অভাব সম্পর্কে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দুই বছর: দৃঢ় পুতিন, দ্বিধাবিভক্ত পশ্চিমারা
তিনি বলেন, সহযোগী দেশগুলোর কাছে এমন কিছু অস্ত্র আছে, যা ইউক্রেনের অস্তিত্বের খাতিরে এখনই প্রয়োজন। কেন সেই অস্ত্র ইউক্রেনের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে না, তা বুঝতে পারছেন না জেলেনস্কি। বিশেষ করে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও গোলাবারুদের অভাব সম্পর্কে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জার্মানির কাছ থেকে দূর পাল্লার টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বারবার সেই সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। জার্মানির স্প্রিঙার মিডিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, সম্ভবত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের হুমকির কারণেই জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস সে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র ইউক্রেনকে দিতে ভয় পাচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
জেলেনস্কি মার্কিন কংগ্রেসে আটকে থাকা বিশাল অংকের সামরিক সহায়তা প্যাকেজ দ্রুত অনুমোদনেরও আশা ছাড়ছেন না। তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইউক্রেন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যা তিনি গ্রহণও করেছেন। তবে এখনো সেই সফরের কোনো দিনক্ষণ স্থির করা হয়নি।
জেলেনস্কি অবশ্য ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাব সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেছেন। পশ্চিমা জগতের কাছ থেকে আধুনিক অস্ত্র পেলে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে পরাজিত করার বিষয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছেন। রাশিয়ার হাত থেকে অধিকৃত ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করতে জেলেনস্কি আবার এক সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ‘কাতরকণ্ঠে’ সাহায্য চাইলেন জেলেনস্কি
ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় বিরোধী রিপাবলিকান দলের উদ্দেশ্যে সংসদের নিম্ন কক্ষে ইউক্রেনের জন্য সহায়তার প্রস্তাব দ্রুত অনুমোদনের আবেদন জানিয়েছেন। সোমবার তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে নৈশভোজ করেন। ‘ব্যক্তিগত' সেই সাক্ষাতের সময় তিনি ন্যাটোর ভবিষ্যৎ ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন। রিপাব্লিকান দলের অন্যান্য কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলোচনা করলেও সংসদের নিম্ন কক্ষের স্পিকার মাইক জনসনের সঙ্গে তিনি কথা বলার সুযোগ পাননি।
ক্যামেরন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু হিসেবে তিনি সে দেশের স্বার্থেই ইউক্রেনের জন্য সহায়তার আর্জি জানাচ্ছেন। তার মতে, পশ্চিমা জগত তাদের সহযোগীদের কতটা সহায়তা করছে, তেহরান, এই মুহূর্তে পিয়ংইয়ং ও বেইজিং এর মতো শহরে সবাই তা পর্যবেক্ষণ করছে। এই বেআইনি ও অপ্ররোচিত হামলা মোকাবিলা করতে ইউক্রেনকে যথেষ্ট সহায়তা দেওয়া হচ্ছে কিনা, সে দিকে অন্যদেরও নজর থাকবে।
একে