রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সিরিয়া যুদ্ধের ১৪ বছর, সংকটের শেষ কোথায়?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০২৪, ০২:০৬ পিএম

শেয়ার করুন:

সিরিয়া যুদ্ধের ১৪ বছর, সংকটের শেষ কোথায়?
১৪ বছরের যুদ্ধে গৃহহারা লাখ লাখ মানুষ- ফাইল ফটো/এএফপি

সিরিয়ার সংঘাত পা দিয়েছে ১৪তম বছরে। এই দীর্ঘ সময়েও যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটিতে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান এখনও রয়ে গেছে অধরা। সরকার-বিরোধী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অধিকাংশ ভূখণ্ড ধীরে ধীরে পুনর্দখল করেছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকার ও তাদের অনুগত বাহিনী। এরপরও এই বাহিনী একাধিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। এই অঞ্চলের কিছু ভূখণ্ড এখনও বিদ্রোহী একাধিক গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সিরিয়ার উত্তর-পূর্বে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনী বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। কিছু এলাকা তারা ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীর কবল থেকে মুক্ত করেছে।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: সিরিয়া থেকে তেল চুরি করছে মার্কিন সেনাবাহিনী! 

ওয়াশিংটনে থাকা সিরিয়া বিষয়ক গবেষক জন সালেহ বলেন, সিরিয়ায় একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধান কল্পনা করা কঠিন। কেননা যুদ্ধ এখনও চলছে। সিরিয়ার সংঘাতের প্রকৃতি জটিল হওয়ায় কার্যকরী সমাধান বের করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। এটি বহুমাত্রিক ও বহুমুখী যুদ্ধ এবং একে বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক ঐক্যমতের প্রয়োজন, যা পাওয়া স্পষ্টতই কঠিন।

জাতিসংঘের বক্তব্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এই আন্দোলন দ্রুত গৃহযুদ্ধের রূপ নেয়। এর ফলে ৩ লাখের বেশি মানুষ নিহত হয় ও ১.৩ কোটি মানুষ ছিন্নমূল হয়ে পড়ে। ব্রিটেনে অবস্থিত মানবাধিকার বিষয়ক সিরিয়ান অবজারভেটরিসহ অন্যান্য যুদ্ধ সংক্রান্ত নজরদারি সংস্থার হিসাবে এই গৃহযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৫ লাখ।

জাতিসংঘ চলতি সপ্তাহে বলেছে, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ এক কোটি ৬৭ লক্ষ মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ‘আরব বলয়ে’ ফিরছে সিরিয়া 

গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ইউএন নিরাপত্তা পরিষদের ২২৫৪ প্রস্তাব প্রয়োগের মাধ্যমে যুদ্ধে ইতি টানার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে গৃহীত এই প্রস্তাবনার লক্ষ্যই হলো, রাজনৈতিক পালাবদলের মাধ্যমে সিরিয়ার সংঘাতকে বন্ধ করা। সে দেশের জন্য নতুন সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ সেখানকার সরকার ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনাও করেছে।

ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসিসের গবেষণা বিভাগের অধিকর্তা ডেভিড অ্যাডেসনিক বলেন, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে জাতিসংঘের নেতৃত্বে সিরিয়ার শান্তি বৈঠকগুলি ফলপ্রসু বা কার্যকর হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।

এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতে সিরিয়ার অর্থনীতি ধসে গেছে। এর ফলে মাদক পাচার ও অন্যান্য অবৈধ ক্রিয়াকলাপের উপর নির্ভরশীল নানা উদ্যোগের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন: সিরিয়ায় সামরিক ঘাঁটি খুলতে যাচ্ছে রাশিয়া

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দেশ, বিশেষ করে শাসক দলের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলি ক্যাপ্টাগনের উৎপাদন ও পাচারের আঞ্চলিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ক্যাপ্টাগন হল সস্তায় উৎপন্ন অ্যামফেটামাইনের মতো এক ধরনের মাদক।

নিউ লাইনস ইন্সটিটিউটের সিনিয়র বিশ্লেষক ক্যারোলাইন রোজ বলেন, আমরা যখন সিরিয়ায় রাজনৈতিক রফা-নিষ্পত্তি (বিশেষ করে জাতিসংঘের প্রস্তাব ২২৫৪-এর অধীনে) নিয়ে আলোচনা করব, তখন শাসক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত অবৈধ নেটওয়ার্কগুলি নিয়েও কথা বলা উচিত।

সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর