আব্দুস সালামের জীবনের স্বপ্ন ছিল মদীনার মসজিদে নববীতে নামাজ পড়া। ওমরাহ পালনের জন্য বাদশাহ সালমানের বিশেষ অতিথি হয়ে ওঠার আগ পর্যন্ত ভ্যানচালক নিশ্চিত ছিলেন না যে, এটি কখনো সত্যি হবে।
এই বছর হজ ও ওমরাহর জন্য সৌদি আরবের ইসলামিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এক হাজার জনকে আমন্ত্রণ জানান সৌদি বাদশাহ। তাদের মধ্যে রয়েছেন ২৯ বাংলাদেশিও। খবর আরব নিউজের
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: হজযাত্রীদের জন্য নতুন সুখবর দিল সৌদি
বাদশাহের অতিথিদের মধ্যে বেশিরভাগই ইসলামিক স্কলার এবং বুদ্ধিজীবী। তাদের মধ্যে আব্দুস সালামের সুযোগ পাওয়া খুব একটা সহজ ছিল না। তবে ঝিনাইদহ জেলার একটি সরকারি মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে কাজ করা আব্দুস সালাম ঢাকার সৌদি দূতাবাসের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন। দূতাবাসই তাকে এই সুযোগ করে দিয়েছে।
আব্দুস সালাম আরব নিউজকে বলেন, 'আমি একজন সাধারণ ভ্যানচালক। আমার মদিনা ও মক্কা ভ্রমণ সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র সৌদি বাদশাহর উদারতার কারণে। অন্যথায়, এটি আমার পক্ষে কখনোই সম্ভব হতো না।
তিনি বলেন, আমি বহু বছর ধরে পবিত্র স্থান পরিদর্শনের স্বপ্ন লালন করে আসছি। আমি সর্বদা আশাবাদী ছিলাম যে, একদিন মহান আল্লাহ আমার ইচ্ছা পূরণ করবেন।
আব্দুস সালাম গত সপ্তাহে মদিনায় পৌঁছান এবং মক্কার মসজিদ আল-হারামের পরে ইসলামের দ্বিতীয় পবিত্র স্থান মসজিদে নববিতে জুমার নামাজ আদায় করেন। তিনি বলেন, মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশের পর আমার হৃদয় প্রশান্তিতে ভরে গিয়েছিল। মসজিদে নামাজ পড়লাম। আমার কাছে এটি জীবনের সবচেয়ে বড় অভিজ্ঞতা ছিল।
ঝিনাইদহের এই ভ্যানচালক বলেন, 'আমি সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করেছি। আমি বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের অবসানের জন্যও প্রার্থনা করেছি। আমি ফিলিস্তিনি ভাইদের জন্য প্রার্থনা করেছি, যারা এখন অবর্ণনীয় দুর্ভোগের সম্মুখীন। আমি সৌদি বাদশাহ এবং আমার দেশের জনগণ এবং আমার পরিবারের সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করেছি।'
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি যাত্রী অসুস্থ: অনুমতি দেয়নি ভারত, বিমান নামল পাকিস্তানে
সৌদি আরবে পৌঁছানোর মুহূর্ত থেকে যেভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে তাতে তিনি অভিভূত। তিনি বলেন, সৌদিতে আসার আগে আমি এই দেশের মানুষের আতিথেয়তার কথা অনেক শুনেছিলাম। আমি মদীনায় অবতরণের পর সেই আতিথেয়তার সাক্ষী হয়েছি এবং এটা আমার কল্পনার বাইরে ছিল। আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার মতো ভাষা নেই।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী এজাজুল হকও বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের অংশ ছিলেন। সৌদি আরবে বাদশাহের অতিথি হিসেবে থাকাটা তার জন্য কল্পনার বাইরে ছিল।
তিনি বলেন, 'আরবি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি আমার গভীর ভালোবাসা রয়েছে এবং সেই চেতনার দ্বারা চালিত হয়ে আমি আরবি অধ্যয়নে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু আমি এখনও একজন ছাত্র... আমন্ত্রণ পেয়ে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।'
একে

