শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

হুথি দমনে লোহিত সাগরে কেন যুক্তরাষ্ট্রের পাশে নেই চীন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:০৬ পিএম

শেয়ার করুন:

হুথি দমনে লোহিত সাগরে কেন যুক্তরাষ্ট্রের পাশে নেয় চীন?
গত মাসে এই জাহাজটি আটক করে হুথিরা। ছবি: রয়টার্স

চীন কেন লোহিত সাগরে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন নৌবাহিনীতে যোগ দেয়নি। বিশ্লেষকরা বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমন্ত্রিত হুথিদের বিরুদ্ধে চীন লোহিত সাগরে নৌবাহিনী মোতায়েন করবে না। কারণ এটি ইসরায়েল-গাজা সংঘর্ষে তাদের অবস্থানকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।

ইয়েমেনে অবস্থিত ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত সামরিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় ড্রোন এবং মিসাইল দিয়ে লোহিত সাগরে ইসরায়েল-সংযুক্ত বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে আক্রমণ চালাচ্ছে। এরপরই তাদের দমনে বিভিন্ন দেশকে জড়ো করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।


বিজ্ঞাপন


গত সপ্তাহে পেন্টাগন জানিয়েছে, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক যানবাহন হুথিদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ২০টিরও বেশি দেশ মার্কিন নেতৃত্বাধীন একটি নতুন জোটে অংশ নিতে সম্মত হয়েছে।

আরও পড়ুন: ৭০ বছরে সর্বোচ্চ ঠান্ডা বেইজিংয়ে, জমে গেছে চীন

তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চীনা জাহাজের প্রকৃত নিরাপত্তা হুমকি না হওয়া পর্যন্ত জলদস্যুতা বিরোধী অভিযানে অংশ নাও নিতে পারে বেইজিং।

হুথিরা লোহিত সাগরের যে অঞ্চলটিকে হুমকি সৃষ্টি করছে সেটি ইয়েমেনি উপকূল বরাবর লোহিত সাগর থেকে এডেন উপসাগর পর্যন্ত বাব এল-মান্দেব প্রণালীর চারপাশে কেন্দ্রীভূত। এটি একটি শক্তিশালী করিডর যেটি মিশরের সুয়েজ খালের সাথে ইউরোপ এবং এশিয়াকে সংযুক্ত করেছে।


বিজ্ঞাপন


নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে হামলা আরও তীব্র করেছে হুথি। এর ফলে ওই পথ দিয়ে জাহাজ চলাচল স্থগিত করেছে ইউরোপের সিএমএ, সিজিএম, মারস্ক এবং ভূমধ্যসাগরীয় শিপিং কোম্পানিগুলো। এর সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জায়ান্ট কসকো এবং তাইওয়ানের এভারগ্রিন মেরিনও রয়েছে।

আরও পড়ুন: পর্যটক বাড়াতে ভিসার নিয়ম শিথিল করল চীন

রোববার মারস্ক মার্কিন নেতৃত্বাধীন নৌ অভিযানের উদ্ধৃতি দিয়ে ঘোষণা করেছিল যে, তারা লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে কার্যক্রম পুনরায় শুরু করবে। সংস্থাটি আবার এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে প্রবেশদ্বার হিসাবে সুয়েজ খাল ব্যবহার করবে।

১৮ ডিসেম্বর ঘোষিত মার্কিন জোটে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে এবং স্পেন এবং সেশেলস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সেখানে মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র দেশ হিসেবে যোগ দিয়েছে বাহরাইন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলেছে যে, চীনকে লোহিত সাগর রক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওয়াশিংটন বলছে, 'হুথি হামলা প্রতিরোধে বেইজিংয়ের গঠনমূলক ভূমিকাকে স্বাগত জানানো হবে'।

আরও পড়ুন: চীনের ঋণ খেলাপির রেকর্ড, লাখ লাখ নাগরিক কালো তালিকাভুক্ত

তবে বেইজিং সরাসরি আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন যে, চীন প্রাসঙ্গিক পক্ষগুলোকে বিশ্বাস করে। বিশেষ করে প্রভাবশালী প্রধান দেশগুলোকে, লোহিত সাগরে শিপিং লেনগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে একটি গঠনমূলক এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

ইউএস ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির আফ্রিকা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের একজন গবেষণা সহযোগী পল নান্টুল্যা বলেন, চীনা বাহিনী মার্কিন নেতৃত্বাধীন মিশনে যোগদানের ঝুঁকির কারণ হলো যে, চীন গাজায় মার্কিন অবস্থানের পক্ষে যাবে। যদিও সেখানে তাদের অবস্থান মুখোমুখী।

চীন ধারাবাহিকভাবে গাজা এবং পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করে আসছে। দেশটি গাজায় স্থায়ী মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবি করেছে।

সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর