গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮৪ দিনে ১০৬ সাংবাদিক নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের গাজা মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, মধ্য গাজা উপত্যকায় নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় আরেক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আল-কুদস টিভির একজন সাংবাদিক ওই ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। এর ফলে গাজায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০৬ জন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গাজা মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে গাজায় সাংবাদিকদের হত্যা করেছে। যাতে করে ফিলিস্তিনিদের চুপ করিয়ে রাখা যায় এবং সত্য গোপন করা যায়। এছাড়া আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংবাদ ও তথ্য পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: 'আরও বহু মাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সক্ষম হামাস'
উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ওপর প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল পাশবিকতা চালিয়ে গেলেও কোনো পশ্চিমা দেশ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত তেল আবিবকে আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করছে না।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২১ হাজার ৫০৭ জন।
বিজ্ঞাপন
গাজার সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫৬ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন সাত হাজার। নিখোঁজরা সবাই মারা গেছেন এবং ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হতাহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে চলা বোমা হামলায় সামগ্রিকভাবে গাজার জনসংখ্যার প্রায় চার শতাংশ নিহত, আহত বা নিখোঁজ হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, হতাহত ফিলিস্তিনিদের বেশিরভাগই হচ্ছে বেসামরিক জনগণ।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য ইরানে ৪ ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে নিয়ে গাজা উপত্যকায় ফিরে যায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।
ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’
সূত্র : আল-জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি
এমইউ

