গাজায় আরও তিন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। বুধবার ভোরে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে মঙ্গলবার উত্তর গাজা উপত্যকায় তাদের এক সামরিক কর্মকর্তা এবং দুই সেনা নিহত হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে তাদের নিহত সৈন্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৪ জন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ তথ্য দিয়েছে। তবে এ হতাহতের সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার গাজা উপত্যকার মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের আল-বুরেইজ এলাকায় হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের প্রচণ্ড লড়াই হয় এবং সেখানে এই তিন সেনা নিহত হয়।
আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ২৪১ ফিলিস্তিনি নিহত
দ্যা টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, নিহত ইসরায়েলি সেনারা হচ্ছেন - লে. ইয়ারন এলিজার চিটিজ (২৩), ইতাই বুটন (২০) ও এফ্রেইম জ্যাকম্যান (২১)। তাদের মধ্যে লে. ইয়ারন ছিলেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গিভাতি ব্রিগেডের ডেপুটি কমান্ডার। এছাড়া ইতাই ও এফ্রেইম হচ্ছেন স্টাফ সার্জেন্ট, তারা দু’জনেই গিভাতি ব্রিগেডের সেনা।
পূর্বের এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, কমান্ডারসহ গাজায় তাদের পাঁচ সৈন্য নিহত হয়েছে। এছাড়া ৪৩ জন ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৯ জনের অবস্থা গুরুতর।
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েল যখন বলছে যে গাজা উপত্যকায় তাদের স্থল অভিযানের মাত্রা বেড়েছে, ঠিক তখন এসব সেনা নিহত হওয়ার খবর এলো।
গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযানে ইসরায়েলের ১৬৪ জন সেনা নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করলেও হামাস বলছে, নিহত ইসরায়েলি সেনার সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি।
গতকাল এক প্রকাশ্য বিবৃতিতে হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার বলেছেন, তাদের যোদ্ধাদের হামলায় এ পর্যন্ত ইসরায়েলের ১৬০০ সেনা নিহত এবং তিন হাজারের বেশি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। আহত সেনাদের প্রায় অর্ধেক চির দিনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছে বলে তিনি জানান।
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, ক্রিসমাস ইভ থেকে মধ্য গাজায় বোমার আঘাতে শতাধিক ফিলিস্তিন মারা গেছেন। কিছু বাসিন্দাকে ইসরায়েল অন্যত্র চলে যেতে বলে।
জাতিসংঘ ঘোষণা করেছে, ডাচ প্রতিমন্ত্রী সিগরিদ কাগ গাজায় বিশেষ মানবিক সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করবেন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় ত্রাণ সাহায্যের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য একটি প্রস্তাব পাস করার পর কাগকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: আমরা যুদ্ধে হেরে গেছি: ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষা প্রধান
অপরদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কাতারের আমিরের সঙ্গে বন্দীদের মুক্ত করা নিয়ে কথা বলেছেন।
কাতার ও মিসরই ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর কাজ করছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, দুই নেতা হামাসের হাতে বন্দী বাকি সব মার্কিন নাগরিককে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। এর পাশাপাশি গাজায় আরও ত্রাণ পাঠানোর বিষয়টি নিয়েও কথা হয়েছে।
কাতারের সরকারি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, বাইডেন কাতারের আমিরকে ফোন করেছিলেন। গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে দুই নেতার কথা হয়েছে।
মঙ্গলবার ইসরায়েলের স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী রন ডেরমার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
সূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স, আনাদোলু এজেন্সি
এমইউ