রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ২১ হাজার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:০৩ পিএম

শেয়ার করুন:

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ২১ হাজার
গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। ছবি: এবিসি

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২১ হাজার। মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য দিয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ২০ হাজার ৯১৫ জন নিহত হয়েছে এবং ৫৪ হাজার ৯১৮ জন আহত হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


এছাড়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে গত ২৪ ঘন্টায় ২৪১ জন নিহত এবং ৩৮২ জন আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধের বিষয়ে ইরান ও সিরিয়ার ঐক্যমত্য

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তাদের বিমান বাহিনী গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকার দক্ষিণে ১০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করেছে।

অপরদিকে গাজার সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হতাহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। 


বিজ্ঞাপন


ফিলিস্তিন বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ বলেছেন, গাজায় ইসরায়েল যে গণহত্যা চালাচ্ছে তাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিরবতা বজায় রাখার মধ্য দিয়ে মূলত তাদের এই অপরাধযজ্ঞ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়ার সবুজ সংকেত দিয়েছে। তিনি বলেন, গাজার পরিস্থিতি এখন অনেকটা সেব্রেনিৎসা ও রুয়ান্ডার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা সামাজিক মাধ্যম এক্স পেইজে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, নিবিড়ভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে অন্য গণহত্যাগুলোর মতোই গাজায় বেসামরিক জনগণকে হত্যা করা হচ্ছে। এটা একটা প্রক্রিয়া যা এক দিনেই ঘটে না। এই গণহত্যা এখনি বন্ধ করা উচিত। কিন্তু রুয়ান্ডা ও সেব্রেনিৎসার মতো গাজায়ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে।

বসনিয়া ও সার্বিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলাকালীন ১৯৯৫ সালে বর্বর সার্ব বাহিনী ভয়াবহ গণহত্যা চালায় এবং এতে অল্প কিছু দিনের মধ্যে অন্তত আট হাজার মানুষ নিহত হয়। এছাড়া, ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় গণহত্যা সংঘটিত হয় - যেখানে অন্তত ১০ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘ বিশেষ দূতের এই এক্স পেইজ পোস্টের আগে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: গাজায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ১৪ ইসরায়েলি সেনা

উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ওপর প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল পাশবিকতা চালিয়ে গেলেও কোনো পশ্চিমা দেশ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত তেল আবিবকে আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান পর্যন্ত জানায়নি।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে নিয়ে গাজা উপত্যকায় ফিরে যায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।

ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’

সূত্র : আল-জাজিরা, মিডল ইস্ট আই, আনাদোলু এজেন্সি

এমইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর