গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির শেষ দিন আজ। এই পরিস্থিতিতে জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতির সময় বাড়াতে চায় হামাস। রবিবার রাতে এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছে সশস্ত্র ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীটি। খবরটি জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
হামাস জানায়, ফিলিস্তিনের কারাবন্দিদের মুক্ত করতে সোমবার রাতের পরে যুদ্ধবিরতি বাড়াতে চায় তারা। খবর সিএনএন এর
বিজ্ঞাপন
গত শুক্রবার শুরু হওয়া চার দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কথা আজ সোমবার। চুক্তির অধীনে তিন দিনে ইসরায়েলের কারাগার থেকে ১১৭ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বিপরীতে ৫৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। চারদিনের যুদ্ধবিরতিতে হামাস মোট ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেবে এবং ইসরায়েল ১৫০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্ত করবে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
আরও পড়ুন: গাজায় গিয়ে হুমকি দিলেন নেতানিয়াহু
অন্যদিকে গত শনিবার কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে এর মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগের কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সিএনএন এর প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল সন্ধ্যায় ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে বৈঠক করেছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে চুক্তিতে যে শর্ত আছে তা অপরিবর্তিত থাকবে। অর্থাৎ, বাড়তি মেয়াদে প্রতিদিন হামাসকে ১০ জিম্মি মুক্তি দিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এবং কাতারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। গতকাল রোববার ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক করেছিল। হামাস যদি প্রতিদিন ১০ জন করে জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে একদিন করে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে বলে শর্তের কথা বলেছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা।
তবে দুই পক্ষ এখনও যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
এদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিরতি শেষে পুনরায় অভিযান চালানোর ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাশাপাশি, যুদ্ধ শুরুর আগে সর্বোচ্চসংখ্যক জিম্মির মুক্তি বাস্তবায়নের দিকেও তাকিয়ে আছে তারা।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভ
গত ৭ অক্টোবর গাজার সীমান্ত সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ সময় হামাস ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায়।
হামাসের হামলার পর ওইদিন থেকেই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ব্যাপক ও ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। ৪৮ দিন ধরে তাদের অবিরাম হামলায় গাজার বাসিন্দা সাড়ে ১৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়। কাতারের মধ্যস্থতায় ৪৮ দিন পর তারা হামলা থামিয়ে যুদ্ধে চার দিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছায় হামাস ও ইসরায়েল।
একে