ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গেলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। চলমান যুদ্ধবিরতির তৃতীয়দিন রোববার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন তিনি। এ সময় সেনাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহু বলেন, কোনো কিছুই আমাদের থামাতে পারবে না। আমরা নিশ্চিত আমাদের শক্তি, ইচ্ছা এবং যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ় সংকল্প আছে এবং আমরা সেটাই করব।
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দফতর নেতানিয়াহুর গাজায় যাওয়ার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে— তিনি সেনাদের উদ্দেশ্যে বলছেন, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে সব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা তাদের ফিরিয়ে আনব।
নেতানিয়াহু বলেন, এ যুদ্ধে আমাদের তিনটি লক্ষ্য। হামাসকে নির্মূল করা, সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনা এবং নিশ্চিত করা গাজা ইসরায়েলের জন্য আর হুমকি হয়ে দাঁড়াবে না।
আরও পড়ুন: সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে গাজায় কী হবে?
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘আমরা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাব, বিজয়ের আগ পর্যন্ত কোনো কিছুই আমাদের থামাতে পারবে না। আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে, আমাদের সেই শক্তি, সামর্থ্য আছে। আমাদের ইচ্ছা এবং দৃঢ়তা আছে সব লক্ষ্য অর্জনের এবং আমরা অর্জন করবও।’
নেতানিয়াহুর সদর দফতরের বিবৃতি অনুযায়ী, তিনি হামাসের একটি টানেলও পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- চিফ অফ স্টাফ জাচি ব্রাভারম্যান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হ্যানেগবি, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল আভি গিল এবং ডেপুটি আইডিএফ চিফ অফ স্টাফ মেজর জেনারেল আমির বারাম।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির মধ্যে এ পর্যন্ত তৃতীয় দফায় বন্দি বিনিময় হয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদন মতে, শুক্রবার যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ১৩ জন ইসরায়েলি শিশু ও বৃদ্ধকে মুক্তি দেয়। অপরদিকে নারী-শিশুসহ ৩৯ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দিন হামাস নারী-শিশুসহ ১৩ জন ইসরায়েলিকে মুক্তি দেয়। যার মধ্যে ছয়জন নারী ও সাতজন শিশুকে। বিপরীতে নারী ও শিশুসহ ৩৯ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। যার মধ্যে ছয় জন নারী ও ৩৩ জন শিশু।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি
যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিন রোববার ( ২৬ নভেম্বর) তৃতীয় দফায় ১৩ ইসরায়েলি ও ৪ বিদেশি নাগরিককে মুক্তি দেয় হামাস। আর এর বিনিময়ে ৩৯ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
গত ৭ অক্টোবর গাজার সীমান্ত সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ সময় হামাস ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায়।
হামাসের হামলার পর ওইদিন থেকেই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ব্যাপক ও ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। ৪৮ দিন ধরে তাদের অবিরাম হামলায় গাজার বাসিন্দা সাড়ে ১৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়। কাতারের মধ্যস্থতায় ৪৮ দিন পর তারা হামলা থামিয়ে যুদ্ধে চার দিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছায় হামাস ও ইসরায়েল।
একে