শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের হামলা কি ভারতকে ভাবাচ্ছে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৪৫ পিএম

শেয়ার করুন:

মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের হামলা কি ভারতকে ভাবাচ্ছে?
'অপারেশন ১০২৭' মিয়ানমারের জান্তা সরকারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। ছবি: এএফপি/ডয়চে ভেলে

মিয়ানমারে সামরিক জান্তার ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে সাম্প্রতিক একটি বিদ্রোহী হামলা। বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, এর আঁচ পড়তে পারে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলেও।

প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী 'থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স' বা থ্রিবিএইচএ-র কার্যকলাপের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ভারত কর্তৃপক্ষ।নতুন দিল্লির নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে, বিশেষ করে মণিপুর ও মিজোরামে, যেখানে সীমান্ত পেরোলেই মিয়ানমার।


বিজ্ঞাপন


এই থ্রিবিএইচএ'র সদস্য মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), দ্য টা'আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) ও দ্য আরাকান আর্মি (এএ)। ২৭ অক্টোবর মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের শান রাজ্যে হামলা চালায় তারা। 'অপারেশন ১০২৭' নামের এই হামলায় তারা নিশানা করে ১৩৫টি সামরিক ঘাঁটিকে।

আরও পড়ুন: মিয়ানমারে সেনা আটক বিদ্রোহীদের, ৪৩ সেনা পালিয়ে ভারতে

চীনের সাথে মিয়ানমারের সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এছাড়া হারিয়েছে ভারতের মিজোরাম সীমান্তের কাছে অবস্থিত রিহখাওডর শহরের নিয়ন্ত্রণও। সহিংসতা গিয়ে পৌঁছেছে থাইল্যান্ডের নিকটবর্তী মিয়ানমারের কায়াহ রাজ্যে, ভারতের নিকটবর্তী সাগায়িং ও চিন প্রদেশেও।

হানাহানির ফলে মিয়ানমারের হাজার হাজার মানুষ গত সপ্তাহে মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও। পরে তাদের আরেকটি সীমান্ত পারাপারের স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় ও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।


বিজ্ঞাপন


ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী সাংবাদিকদের জানান, 'আমরা মিয়ানমারে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের কথা আবার মনে করাচ্ছি। চিন প্রদেশে রিহখাওডর এলাকায় সহিংসতার ফলে মিয়ানমারের মানুষ ভারতের দিকে চলে আসছেন। সীমান্তের এত কাছে এসব ঘটায় আমরা গভীরভাবে চিন্তিত।'

বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে মিজোরামের জন্য তা সমস্যাজনক হতে পারে, কারণ মিয়ানমারের সাথে ৫১০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত পুরোপুরি নিশ্ছিদ্র নয়।

আরও পড়ুন: মিয়ানমারে তীব্র লড়াই, শত শত নাগরিককে সরিয়ে নিচ্ছে থাইল্যান্ড

লন্ডনের স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের অধ্যাপক অভিনাশ পালিওয়ালের মতে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ একটি দ্বিমুখী নিরাপত্তা নীতি গ্রহণ করেছে। মিয়ানমারে ভারতের বৃহত্তর স্বার্থ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সামরিক জান্তাকে সমর্থন করে যাচ্ছে। অন্যদিকে, সীমান্তে টহলও বাড়াচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ পালিওয়াল বলেন, 'মণিপুরের পরিস্থিতির সাথে মিয়ানমারের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। ফলে, নতুন দিল্লিতে আগামীতে নতুন সরকার এলেও যে তাদের নীতি বদলাবে, তা নয়। এই সহিংসতা যদি জান্তা সরকারকে সরাতে সক্ষম হয়, যা এই মুহূর্তে নিশ্চিত নয়, তাহলে ভারতকে বিদ্রোহী নেতৃত্বের সাথে বোঝাপড়ায় যেতে হবে।'

১৫ অক্টোবর ভারতের ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বিক্রম মিস্ত্রি মিয়ানমারে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে জাতিগত সংঘাত নিরসনে শান্তিচুক্তির ওপর জোর দেন তিনি।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর