শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ঢাকা

ফুটবলার হতে চেয়েছিল আসিফ, পা কেড়ে নিল ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৪২ পিএম

শেয়ার করুন:

ফুটবলার হতে চেয়েছিল আসিফ, পা কেড়ে নিল ইসরায়েল
গাজার শিশু আসিফ আবু মাহাদি। ছবি আল জাজিরার ভিডিও থেকে নেয়া।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার বাসিন্দা ১১ বছর বয়সী আসিফ আবু মাহাদি। তার স্বপ্ন ছিল একজন ফুটবলার হওয়ার। কিন্তু নুসিরাত শরণার্থী শিবিরের কাছে একটি বাড়ি লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বোমা হামলায় গুরুতর আহত হয় সে। এরপর তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার কাছে নিজের গল্প বলেছেন আসিফ মাহাদি। নুসিরাত শরণার্থী ক্যাম্পে বাস করা আসিফ আবু মাহাদি বলে, আমি যুদ্ধের মধ্যেই জন্মগ্রহণ করেছি। গাজায় অনেকগুলো যুদ্ধ দেখার অভিজ্ঞতা আছে। তবে এবার যখন আমার বাড়িতে বোমা পড়ল তখন মনে হয়েছিল যে, আমি স্বপ্ন দেখছি।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা পুনর্নির্মাণ করবে তুরস্ক

আসিফ বলে, বোমার আঘাতে ছাদ আমার ওপর এসে পড়ে। চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। আমার ভাই আমাকে কাঁধে করে প্রচণ্ড বোমা হামলার মধ্যেই আল আওদা হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে আল আকসা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কোনো ধরনের অবশ করা ছাড়াই আমার পা কেটে ফেলেন চিকিৎসকরা। আমার বেঁচে ফেরার জন্য আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাই।

যুদ্ধের আগে আমি আল ওয়াহাদা ফুটবল একাডেমিতে খেলতাম। আমি এখনকার ইনজুরিসহ সব বাধা অতিক্রম করতে চাই। ফুটবলে আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই। এটি চালিয়ে যেতে এখন আমার একটি আর্টিফিসিয়াল পা প্রয়োজন।

১১ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি শিশু জানায়, আমি শিক্ষাগ্রহণ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমি আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সবকিছু করব। কোনো বাধাই আমাকে থামাতে পারবে না।


বিজ্ঞাপন


ছোট্ট আসিফের কণ্ঠে ছিল দৃঢ়তা। সে বলে, আমি হাসপাতালে থাকা অবস্থায়ও আশা হারাইনি। আমি স্কুলে ফেরার ও আবারও ফুটবল খেলতে পারার বিষয়ে আশাবাদী।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের মধ্যে শিশু এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা অন্তত সাড়ে পাঁচ হাজার। এছাড়া সাড়ে তিন হাজার নারীও রয়েছেন।

আরও পড়ুন: গাজায় ‘প্রাণ বাঁচাতে’ ভরসা খালি হাত আর বেলচা

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ১৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ হাজার। আহতদের ৭৫ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া নিখোঁজের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। নিখোঁজদের বেশিরভাগই ধসে পড়া ভবনগুলোর নিচে পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সরায়েলি হামলায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে ৮৩টি মসজিদ। তিনটি গির্জাকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়। ৪৩ হাজারের বেশি আবাসন ইউনিট সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজা উপত্যকার ৬০ শতাংশ আবাসিক ইউনিট।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে ২৫টি হাসপাতাল এবং ৫২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিষেবার বাইরে চলে গেছে। ইসরায়েলি বাহিনী ৫৫টি অ্যাম্বুলেন্সকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। গাজা প্রশাসন সেখানে চলমান নৃশংসতার জন্য ইসরায়েল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দায়ী করেছে।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর