রোববার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

গাজায় ‘প্রাণ বাঁচাতে’ ভরসা খালি হাত আর বেলচা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:০২ এএম

শেয়ার করুন:

গাজায় ‘প্রাণ বাঁচাতে’ ভরসা খালি হাত আর বেলচা
দক্ষিণ গাজার রাফাতে ইসরায়েলি হামলার পর ধ্বংসজজ্ঞে প্রাণ খুঁজছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: এপি

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালিত আল-ফাখুরা স্কুলে, জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে এবং উত্তর গাজার তাল আল-জাতারের আরেকটি স্কুলে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই হামলায় বহু মানুষ নিহত হয়েছে। শুধু আল ফাখুরা স্কুলেই নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি। গাজার আল শিফা হাসপাতাল মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। ধ্বংসজজ্ঞে আটকে থাকাদের খালি হাত আর বেলচা দিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আল-ফাখুরা স্কুলে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। তিনি বলেছেন, ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত এ স্কুলে শনিবার ভোরে হামলা হয়।


বিজ্ঞাপন


ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আল-ফাখুরা স্কুলে ইসরায়েলি হামলা প্রমাণ করে যে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়িয়ে দেওয়া।

আরও পড়ুন: আল-শিফা হাসপাতালে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছে ইসরায়েল!

আল-ফাখুরা স্কুলে বোমা হামলার বিষয়ে মন্তব্য করে হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, শিশু ও বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে হামলা-সহ বিভিন্ন ঘৃণ্য অপরাধের জন্য ইসরায়েল দায়ী থাকবে।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, স্কুল, হাসপাতাল এবং পাবলিক সুবিধাগুলোতে ইসরায়েলি হামলা এখন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। একাধিক বিমান হামলা উভয় স্কুলে মারাত্মক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে।


বিজ্ঞাপন


গাজার সর্বত্র ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে। এমন অবস্থায় সেখানকার বাসিন্দারা জীবন বাঁচাতে এই দুটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, 'এই হামলায় প্রায় ২০০ জন নিহত হয়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক লোক এখনো আটকে রয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।'

gaza_1
গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলি বোমা হামলার পর ধুলো ও রক্তে ঢাকা আহত ফিলিস্তিনি নারী তার আহত মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আছেন। ছবি: এএফপি/আল জাজিরা

তিনি বলেন, ইসরায়েলের হামলায় বহু ভবন ও স্থাপনা একেবারে ধসে গেছে। এসব ভবনের নিচে বহু মানুষ আটকা পড়েছেন। অনেকের প্রাণ রয়েছে। তবে তাদের উদ্ধারের কোনো আধুনিক ব্যবস্থা এখানে নেই। সাধারণ মানুষ খালি হাত আর বেলচা দিয়ে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছে।

আল-জাজিরার তারেক আবু আজজুম আল-ফাখুরা স্কুল সম্পর্কে বলেন, 'মৃতদেহ সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে এবং মেডিকেল দলগুলো আহতদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।'

তিনি বলেন, উত্তর গাজায় ইসরায়েলের স্থল আক্রমণের মধ্যে অব্যাহত লড়াইয়ের সাথে, অনেক ফিলিস্তিনি সুরক্ষার জন্য ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের আশেপাশে জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।

ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আল-ফাখুরা স্কুলে ইসরায়েলি হামলা প্রমাণ করে যে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়িয়ে দেওয়া।

আরও পড়ুন: আল-শিফা হাসপাতালের আইসিইউ’র বেশিরভাগ রোগীই মারা গেছেন

আল-ফাখুরা স্কুলে বোমা হামলার বিষয়ে মন্তব্য করে হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, শিশু ও বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে হামলা-সহ বিভিন্ন ঘৃণ্য অপরাধের জন্য ইসরায়েল দায়ী থাকবে।

শনিবার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে।

গাজার সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে পাঁচ হাজার জন শিশু এবং  তিন হাজার ৩০০ জন নারী।

ফিলিস্তিনি তথ্য কেন্দ্র জানিয়েছে, এক হাজার ৮০০ শিশু-সহ আরও তিন হাজার ৫৭০ জন নারী নিখোঁজ রয়েছেন।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলিরা এক হাজার ২৭০টি গণহত্যা চালিয়েছে। তারা মোট ২০০ চিকিৎসক, ২২ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী এবং ৫১ জন সাংবাদিককে হত্যা করেছে।

তাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২৫টি হাসপাতাল এবং ৫২টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ৫৫টি অ্যাম্বুলেন্সে হামলা করেছে।

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর